গাইবান্ধা-৪ আসনে আ.লীগের মনোনয়ন পেলেন অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
|
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৪ গোবিন্দগঞ্জ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ। রোববার (২৬ নভেম্বর) বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে নৌকার এ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এর আগে রোববার সকালে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। গাইবান্ধা-৪ গোবিন্দগঞ্জ আসনে মনোনায়ন পেতে বর্তমান ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধুরীসহ ১৪ জন প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিয়েছিলেন। তিনি ১৯৫৮ সালের ২৩শে আগস্ট গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গুমানীগঞ্জ ইউনিয়নের পার্বতীপুর (ভাটগ্রাম) গ্রামের সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম কাজেম উদ্দিন সরকার এবং তিনি পেশায় একজন শিক্ষক ছিলেন। তার মাতার নাম আম্বিয়া বেগম এবং তিনি একজন গৃহিনী ছিলেন। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। আবুল কালাম আজাদ ১৯৭৪ সালে ফুলপুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। ১৯৭৮ সালে রাজশাহী নিউ গভঃ ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮১ সালে বিএসসি (অনার্স) এবং ১৯৮৩ সালে স্নাতকোত্তর (ভূগোল) সম্পন্ন করেন। আবুল কালাম আজাদ ১৯৮১ সালে ফুলপুকুরিয়া সবুজ সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন এবং সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা রাজমিস্ত্রি শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করেন এবং সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯২ সালে অগ্নিবীণা সংগীত নিকেতন ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন এবং দীর্ঘ সময় নির্বাহী পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৩ সালে গোবিন্দগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থার কোষাধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৫ সালে ফুলপুকুরিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন এবং অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬ সালে প্রফেসর্স ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন এবং আহবায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে মহিমাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে শহরগছি মডেল বিদ্যালয় ও মহিলা কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে নওগাঁ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সালে গোবিন্দগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে বরকত উল্লাহ বালিকা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে গোবিন্দগঞ্জ কলেজের গভনিং বডির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে গোবিন্দগঞ্জ মহিলা কলেজের গভনিং বডির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে কামদিয়া নুরুল হক কলেজের গভনিং বডির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালে মরহুম কাজেম উদ্দিন সরকার এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৬ সালে মহিমাগঞ্জ আলিয়া (কামিল) মাদরাসার গভনিং বডির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ কভার্ড ভ্যান ট্রাক পন্য পরিবহন মালিক এসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। আবুল কালাম আজাদ ১৯৭২ সালে ছাত্রলীগ (অবিভক্ত) গোবিন্দগঞ্জ ফুলপুকুরিয়া অঞ্চলের সদস্য হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গোবিন্দগঞ্জ থানা শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ) শাখার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বাসদ) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহবায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গাইবান্ধা জেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গাইবান্ধা জেলা শাখার সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০০৮ সালে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শাখার সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০১৬ সালে থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আবুল কালাম আজাদ ১৯৮৮ সালে গুমানীগঞ্জ পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সালে দ্বিতীয়বারের মত গুমানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯৪ সালে গোবিন্দগঞ্জ ইউসিসি (বিআরডিবি)এর সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে নির্বাচনী আসন গাইবান্ধা-৪ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালে ঢাকা শহর যানজট নিরসন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৯২৪ জন। এর মধ্যে অর্ধেক পুরুষ ভোটার ২ লক্ষ ১৬ হাজার ৯৪৯ এবং নারী ভোটার ২ লক্ষ ২২ হাজার ৯৬৯ জন। এছাড়াও তৃতীয় লিঙ্গের ভোাটার সংখ্যা রয়েছে ৬ জন। ভোটারগন ১শত ৩৯টি ভোট কেন্দ্রে ৯শত ২টি পুলিং বুথের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। উত্তর জনপদের উত্তরের ৮ জেলার প্রবেশদ্বার খ্যাত গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সংসদীয় এই আসনটি প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নিকট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে ব্যাখ্যা করেন দলের নেতৃত্বস্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এই আসনে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ এই আসনে সালে জাতীয় পার্টি, ২০০১ সালে বিএনপি, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ও ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) ও ২০১৮ সালে আবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত হয়। উল্লেখ্য, গত শনিবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিজের মনোনয়ন ফরম কেনার মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেছেন। তফসিল অনুযায়ী আগামী ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারী- বাংদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশন। মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর। মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১৭ ডিসেম্বর, প্রতিক বরাদ্ধ ১৮ ডিসেম্বর, নির্বাচনী প্রচার চলবে ১৮ ডিসেম্বর-২০২৩ থেকে ৫- জানুয়ারী-২০২৪ পর্যন্ত। ডেল্টা টাইমস্/সিআর/এমই |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |