বদর যুদ্ধের বন্দীদের সঙ্গে নবীজি সা.-এর আচরণ
ডেল্টা টাইমস্ ডেস্ক:
|
বদর যুদ্ধে মহান আল্লাহর সাহায্যে মুসলমানেরা বিজয়ী হন। ১৪ জন সাহাবি শাহাদত বরণ করেন এবং ৭০ জন কাফির মারা যায়। ৭০ জন কাফিরকে বন্দী করে মদিনায় নিয়ে আসা হয়। রাসূল সা. মদিনায় ফিরে সাহাবিদের সঙ্গে বন্দীদের ব্যাপারে পরামর্শ করেন। আবু বকর রা. নিবেদন করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল সা.! এরা সবাই আমাদের চাচাত ভাই, বংশীয় লোক এবং আত্মীয়। আমার মতে মুক্তিপণ হিসেবে কিছু কিছু অর্থ নিয়ে এদেরকে মুক্তি দেয়া উচিত। এতে আমাদের সাধারণ তহবিল যথেষ্ট অর্থ সঞ্চিত হবে। পক্ষান্তরে অল্প দিনের মধ্যে এদের সবার পক্ষে ইসলাম গ্রহণ করাও সম্ভব হবে। তখন তাদেরকে আমাদের সহায়ক শক্তি হিসেবে আমরা ব্যবহার করতে পারব। তারপর নবী করিম সা. ওমর রা.-কে সম্বোধন করে বললেন, হে খাত্তাবের পুত্র, তোমার অভিমত কী? উত্তরে ওমর রা. বললেন, আল্লাহর কসম! এ ব্যাপারে আমি আবু বকরের সঙ্গে একমত হতে পারছিনা। আমার মত হচ্ছে যে, অমুককে (যিনি ওমর রা.-এর আত্মীয় ছিলেন) আমার হাওয়ালা করে দেন, আমি তাকে হত্যা করি। আকীল বিন আবি তালেবকে আলীর হাওয়ালা করে দিন। তিনি তাকে হত্যা করবেন এবং অমুককে (যিনি হামযাহ রা.-এর ভাই ছিলেন) হামযাহর হালওয়ালা করে দিন, তিনি তাকে হত্যা করবেন। যাতে করে আল্লাহ এটা বোঝেন যে, আমাদের অন্তরে মুশরিকদের সম্পর্কে কোন প্রকার দুর্বলতা নেই। আর এরা ছিল মুশরিকদের সার্বক্ষণিক অগ্রণী নেতা। এরা ইসলামের চির শত্রু এবং মুসলিমদের প্রাণের বৈরী। আমাদেরকে নির্যাতিত করতে, আল্লাহর রাসূল সা.-কে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করতে এবং আল্লাহর সত্য ধর্মকে জগতের পৃষ্ঠ হতে মুছে ফেলতে এরা সাধ্যপক্ষে চেষ্টার কোন ত্রুটি করেনি। এরা অন্যায়, অধর্ম ও অত্যাচারের সাক্ষাৎ প্রতিমূর্তি। এদেরকে অবিলম্বে হত্যা করে ফেলা হোক। প্রত্যেক মুসলিম খোলা তরবারী হাতে দন্ডায়মান হোক এবং নিজ হাতে নিজের আত্মীয়ের মুন্ডপাত করুক, আমার এটাই মত।’ ওমর রা. বলেন, রাসূল সা. আবু বকর রা.-এর মতকেই পছন্দ করলেন, আমার মতকে পছন্দ করলেন না। সুতরাং বন্দীদের কাছ থেকে মুক্তিপণ নেওয়ার সিন্ধান্ত গৃহীত হলো। মুক্তিপণের পরিমাণ চার হাজার দিরহাম পর্যন্ত ছিল। মক্কাবাসীগণ লেখা পড়াও জানত, পক্ষান্তরে মদীনাবাসীগণ লেখাপড়া জানত না বললেই চলে। এ জন্যে এ সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছিল যে, যে মুক্তিপণ দিতে অসমর্থ হবে সে মদীনার দশজন ছেলেকে লেখাপড়া শিখাবে। যখন এ ছেলেগুলো ভালোভাবে লেখাপড়া শিখে নিবে তখন এটাই তার মুক্তিপণ হিসেবে বিবেচিত হবে। রাসূলুল্লাহ সা. কয়েকজন বন্দীর উপর অনুগ্রহও করেছেন এবং তাদেরকে মুক্তিপণ ছাড়াই মুক্ত করে দিয়েছেন। এ তালিকায় মুত্তালিব ইবনু হানতাব, সাইফী ইবনু আবী রিফাআহ এবং আবূ ইযযাহ জুমাহীর নাম পাওয়া যায়। শেষের দুজনকে উহুদের যুদ্ধে বন্দী ও হত্যা করা হয়। ডেল্টা টাইমস্/সিআর/এমই
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |