বাজেট প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও সাধারণ জনগণ
রায়হান আহমেদ তপাদার
প্রকাশ: বুধবার, ৭ জুন, ২০২৩, ১:২৫ পিএম

বাজেট প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও সাধারণ জনগণ

বাজেট প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও সাধারণ জনগণ

একটি নির্দিষ্ট অর্থবছরে দেশের কোনো খাতে কোথায় কত ব্যয় হবে সরকারের এই আর্থিক পরিকল্পনার চিত্র প্রতিফলিত হয় বাজেটের মাধ্যমে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেট থেকে শুরু করে গত বছর পর্যন্ত যেসব বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে তাতে দেখা যায় সময়ের সাথে প্রত্যেকটা বাজেটের আকার বেড়েছে।অর্থনীতিবিদদের মতে, বাজেটে টাকার পরিমাণ বাড়লেও অর্থনীতির অনুপাত হিসেবে বাজেট বাড়েনি। তাদের মতে, সময়ের পরিবর্তনে বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গুণগত যে পরিবর্তন হওয়া উচিত ছিল তা হয়নি। গত পাঁচ দশকের বাজেট প্রণয়নের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে,অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রে এক ধরনের পরিবর্তন এসেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যেখানে রাষ্ট্রায়ত্ব খাতের ওপর নির্ভর করে শিল্পায়নের কথা চিন্তা করা হতো,সরকার বদলের সাথে সাথে সেখানে রাষ্ট্রের জায়গায় ব্যক্তিখাতের ভূমিকাকে বড় করা হয়েছে। প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এ সুপারিশ তুলে ধরেছে সংস্থাটি। পাশাপাশি সিপিডি বলেছে,বর্তমান পরিস্থিতিতে অর্থনীতি ও মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ও বাস্তবতা হচ্ছে উচ্চমূল্য- স্ফীতির চাপ। এ চাপ মোকাবিলায় বাজেটে কার্যকর তেমন কোনো পদক্ষেপই নেই। উল্টো অর্থমন্ত্রী বলেছেন, আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখা হবে।এ ছাড়া বাজেটে এমন কিছু রাজস্ব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, যাতে কিছু পণ্যমূল্য বাড়বে, যার প্রভাব সরাসরি মানুষের, তথা ভোক্তার ওপর পড়বে। বাজেটে সরকার মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ। সিপিডি বলছে, বাজেটে যেসব প্রক্ষেপণ করা হয়েছে, তার বেশির ভাগই বাস্তবভিত্তিক নয়। তাই এসব লক্ষ্য অর্জন শেষ পর্যন্ত হবে না কি না তাও প্রশ্নবিদ্ধ। অর্থনীতিবিদদের মতে, কয়েক দশকের বাজেট পর্যালোচনা করলে বুঝতে পারা যায় যে বাংলাদেশে অবকাঠামো ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মনোযোগ বেড়েছে।

পাশাপাশি বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পও হাতে নিচ্ছে৷ ক্রমান্বয়ে একটা ঐক্যমত দেশের ভিতরে গড়ে উঠেছে মানব সম্পদের দিকে নজর দিতে হবে। শিক্ষা স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে হবে। এটা আশির দশকের দিক থেকে দেখেছি। সে সময় থেকে বাংলাদেশ শিক্ষা স্বাস্থ্যের দিকে অগ্রগামী ছিল বলে এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা অনেকটাই সম্ভব হয়েছে বলে মনে করি। বর্তমান সরকারের ১৫ বছরে দেখেছি ভৌত অবকাঠামোর প্রতি প্রচুর জোর দেয়া হয়েছে। রাস্তাঘাট, সেতু ইত্যাদি এর সাথে বিদ্যুতের ওপরেও জোর দেয়া হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে যেটা হয়েছে কতগুলো বিষয়ে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক পরিকল্পনার ব্যাপারে ঐক্যমত বিরাজ করেছে। বাংলাদেশ যে মানবসম্পদে জোর দিচ্ছে, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি, কৃষির বহুবিধিকরণ, যান্ত্রিকীকরণ এসব বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করছে সরকারগুলো এটা ইতিবাচক দিক বলে মনে হয়। সাম্প্রতিককালে বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে একটা ধারাবাহিকতা বা গতানুগতিকতা লক্ষ্য করা যায়। দশ শতাংশ করে রাজস্ব বাড়বে, দশ শতাংশ করে খরচ বাড়বে। প্রত্যেক খাতে এটাকে দেয়া হবে। বড় বড় প্রকল্প কিছু থাকবে সেটাতে সত্তর শতাংশ চলে যাবে বাকি শতাংশ অন্যান্য প্রকল্পকে ভাগ করে দেয়া হবে। কিন্ত বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। অর্থনীতিবিদদের মতে বাজেট এখন অনেক বেশি নীতিভিত্তিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে হচ্ছে। যেমন- পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, এসডিজি অথবা সরকারের বিভিন্ন খাতভিত্তিক পরিকল্পনাকেও প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে৷ বাজেট বড় হয়েছে, সক্ষমতার জায়গা তৈরি হয়েছে-চাহিদার জায়গা সৃষ্টি হয়েছে, অনেক জায়গায় কার্যক্রম চলছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রসারিত হয়েছে। কিন্তু ৫১ বছর পর এসে বাজেট নিয়ে যে এক্সপেক্টেশন তৈরি হয়েছে তা কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে তা নিয়েই প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের। বড় বাজেট করছি সত্যি। কিন্তু বাজেট বাস্তবায়নের হারের ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন দেখা যায় না, উন্নতিও দেখা যায় না।

এখনো স্বাস্থ্যখাতে টাকা দিলেও বাস্তবায়ন করতে পারে না। আকার বড় হওয়া ছাড়া বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গুণগত পরিবর্তন নেই কেন,এই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। জনগণের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, জিডিপির আকার বেড়েছে-এর পাশাপাশি কর যতটুকু পরিবর্তন হওয়া উচিত ছিল সেই পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।অর্থনীতিবিদদের মতে, বাজেটে যে গুণগত পরিবর্তন দরকার ছিল সেটা তেমন একটা হয়নি। রাজস্বের ক্ষেত্রে বর্ধিত রাজস্ব কোথা থেকে আসবে। এটা কি প্রত্যক্ষ কর থেকে আসবে নাকি পরোক্ষ কর থেকে আসবে? যার দেয়ার সামর্থ্য আছে সে দিবে নাকি যার সামর্থ্য সীমিত তারা সকলেই ভ্যাট দিতে থাকবে? নাকি সম্পদ কর বসাবো? যে বরাদ্দগুলো দেয়া হচ্ছে সেগুলোর কাঠামোগুলো কী রকম-যে শিক্ষার জন্য বরাদ্দ দিচ্ছি সেখানে কি বিল্ডিং উঠবে নাকি শিক্ষকদের পেশাগত মানোন্নয়নের জন্য খরচ করবো? এগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হলেও গুরুত্বপূর্ণ। টাকার অঙ্কে বাজেট বাড়লেও অর্থনীতির অনুপাত হিসেবে বাজেট বাড়েনি বলেই মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। জিডিপির চৌদ্দ কিংবা পনেরো শতাংশে আটকে আছে। করের দিক থেকে যেহেতু দশ শতাংশের বেশি যেতে পারা যাচ্ছে না, তার ফলে পাঁচ শতাংশের ঘাটতি বাজেট নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। বাজেটের ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনতে হলে আয় বাড়াতে হবে এবং সেই আয় দিয়ে গুণমানসম্পন্ন ব্যয় করতে মনোযোগ দিতে হবে। যাইহোক, এবারের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকার যে বাজেট পেশ করেছেন তা বাস্তবায়ন করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। এখন যে মুদ্রাস্ফীতি চলছে, ইউক্রেন যুদ্ধ, করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ডলার সঙ্কট-এর মধ্যে সরকার শ্যাম রাখি না কূল রাখি পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। এবারের বাজেট সন্ধিক্ষণের বাজেট বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। বিগত বছরগুলোর দিকে থাকালে দেখা যায়, বিনিয়োগের দিকে তাকালে ভিয়েতনামে স্বল্পমেয়াদে বিনিয়োগ ক্রমে বাড়ছে যদিও ২০২২-এর তুলনায় চলতি বছরের গোড়ার দিকে তা বিরাট ধাক্কা খেয়েছিল।

কম্বোডিয়ায় মূল্যস্ফীতি একই থাকলেও তাদের বিনিয়োগ ২০২২-এর তুলনায় এ বছর বেড়েছে। সিঙ্গাপুরে বিনিয়োগ কেবল অনেক উঁচুতেই পৌঁছায়নি, তা ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়ামের মতো দেশকেও ছাড়িয়ে গেছে। মালয়েশিয়ায় মূল্যস্ফীতি না বাড়লেও বিনিয়োগ বাড়ছে এবং এরই মধ্যে সে থাইল্যান্ড, তুরস্ক ও রোমানিয়ার মতো দেশকে টপকে সমানে এগিয়ে গেছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় কয়েক বছর ধরে বিনিয়োগ দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ছে। ইন্দোনেশিয়া বিনিয়োগের দিক থেকে ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, ইউক্রেন ও মিসরকে ছাড়িয়ে গেছে। ভারত বিনিয়োগের দিক থেকে ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, ইউক্রেন ও মিসরকেও অতিক্রম করেছে। চীনের কথা আর না-ই বা বললাম। বাংলাদেশের বিনিয়োগের দিকে তাকালে তা ক্রমাগত নিম্নগামী, এমনকি আমাদের চেয়ে বিনিয়োগে মিয়ানমার ও উজবেকিস্তানের মতো দেশ উপরে আছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী উন্নয়নশীল দেশগুলোর মূল্যস্ফীতির মাত্রা মাঝারি ধরনের থাকার কথা। কিন্তু বিগত বছরগুলোর তুলনায় আমাদের দেশে তা দ্বিগুণ হলো কেন? এ মূল্যস্ফীতির ব্যবচ্ছেদ করলে আমরা কী পাই? এডিবির মতে, সারা দুনিয়াতেই পণ্য ও সেবার চাহিদা দুর্বল হয়েছে। ফলে ম্যানুফ্যাকচারিং বা উৎপাদন কমে গেছে। কাজেই এ মূল্যস্ফীতিতে চাহিদার বাড়তি প্রভাব রয়েছে। অন্যদিকে সরবরাহ চেইনে সমস্যা সৃষ্টি করেছে ইউক্রেন যুদ্ধসংক্রান্ত উদ্ভূত পরিস্থিতি। তবে আমাদের দেশে বিপুল পরিমাণ পণ্য ও তার কাঁচামাল আমদানিনির্ভর হওয়ায় উল্লিখিত তিনটির মিলিত প্রভাবে মূল্যস্ফীতির উল্লম্ফন ঘটে থাকতে পারে। তবে এটি বলা যায় যে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির ভেতর খরচের পরিমাণ যেহেতু এতটা বেশি, তাই এটি উদ্যোক্তাকে অধিক মুনাফার প্রেরণা জোগাচ্ছে না। ফলে বিনিয়োগও সে রকম বাড়েনি। করোনা মহামারি আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে নেতিবাচক ধারায় দেশের অর্থনীতি।

ডলারের বিপরীতে টাকার রেকর্ড দরপতন। মূল্যস্ফীতির কারণে জিনিসপত্রের দাম লাগামছাড়া। মানুষের আয় বাড়ছে না, কিন্তু নিত্যপণ্য ও সেবার দাম বেড়েই চলেছে। এই বাস্তবতাসহ নানামুখী চাপের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে যাত্রার চ্যালেঞ্জ নিয়ে ভোটের আগে নতুন অর্থবছরের জন্য সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। দেশের ৫২তম এই বাজেটে তিনি ধনীদের করছাড় দিয়েছেন। সাধারণ মানুষের ওপর করজাল বিস্তার করেছেন। উন্নয়নের অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা শীর্ষক বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, চারটি মূলস্তম্ভের ওপর স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে রয়েছে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সোসাইটি ও স্মার্ট ইকোনমি। স্মার্ট বাংলাদেশে সাড়ে ১২ হাজার ডলার মাথাপিছু আয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। তবে রাজস্ব আহরণের দুর্বলতা সেই লক্ষ্যকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। এর সঙ্গে ভর্তুকি আর ঋণ পরিশোধের চাপ তো রয়েছেই। ফলে বিশেষ এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ও কৌশল বাজেটে নেই। অনেকটা গতানুগতিক বাজেটে ৭.৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যও বাস্তবভিত্তিক নয় বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। এর পক্ষে আরেকটি যুক্তি বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ ধরা, চলতি মূল্যস্ফীতি যেখানে ৯ শতাংশের ওপর।অর্থনীতিবিদদের কেউ কেউ বলছেন, বাস্তবতা ও ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্য ধরাই উচিত ছিল সরকারের। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণকারী সংগঠনগুলো বলছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো, সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়ানোর মতো কিছু স্বস্তি আছে।

কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে পরোক্ষ করের আওতা বাড়ানোয় নিত্যব্যবহার্য অনেক পণ্যের দাম বাড়বে। এতে জীবন যাত্রার ব্যয় আরো বাড়বে। প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষণে দেখা যায়, রাজস্ব আহরণে ভ্যাটনির্ভরতা বাড়ানো হবে। এতে মূল্যস্ফীতির চাপ আরো বাড়বে। গত বাজেটে বড় ধরনের ঘাটতি রয়ে গেছে মূল লক্ষ্যগুলো পূরণ করার ক্ষেত্রে, সেই ঘাটতিগুলো বিবেচনা না করে আবার নতুন করে যে লক্ষ্যমাত্রাগুলো দেওয়া হয়েছে, সেটা বাস্তবতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। অর্থ সংগ্রহের জন্য যা বলা হচ্ছে, তা আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম। যে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা আছে সেটাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য যে পরিমাণ বৈদেশিক অর্থ দরকার সেই পরিমাণ অর্থ সরকারের কাছে নেই। সরকার এই মুহূর্তে বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো চালাতে পারছে না, আমদানিতে ডলারের জোগান দিতে না পারায়। এই বাজেট অর্থনৈতিক বিবেচনার চেয়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় দেওয়া হয়েছে। কারণ দেশ নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অর্জিত হচ্ছে; অর্জনের হারও ভালো। কিন্তু এটাই একমাত্র সূচক নয়। বাজেটে মৌলিক অধিকার পূরণ করার প্রতিশ্রুতি থাকে; শ্রেণি-পেশা-লিঙ্গকেন্দ্রিক বৈষম্য নিরসনের অঙ্গীকার থাকে, জরুরি খাতগুলোর অগ্রাধিকারের বিষয় থাকে। এ নিরিখে বাজেট নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। বাজারদর সাধারণের নাগালে নেই; শিক্ষা, চিকিৎসা বাবদ ব্যয় আকাশচুম্বী। বছরের শেষ দিকে উন্নয়ন বাজেট শেষ করার ধুম পড়ে যায়, দুর্নীতি হয় সীমাহীন, কাজ হয় নিম্নমানের। সার্বিক বিবেচনায় দরিদ্র ও গড় আয়ের মানুষ বাজেটের সুফল পায় না। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সুষম বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জরুরি।


লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট, যুক্তরাজ্য।



ডেল্টা টাইমস্/রায়হান আহমেদ তপাদার/সিআর/এমই

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
  এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ  
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।

ফোন: ০২-৪৭১২০৮৬০, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।
ফোন: ০২-৪৭১২০৮৬০, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com