আটা-ময়দা-সুজি দিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি, গ্রেপ্তার ৫
ডেল্টা টাইমস ডেস্ক:
প্রকাশ: সোমবার, ১ এপ্রিল, ২০২৪, ৮:২৬ পিএম

আটা-ময়দা-সুজি দিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি, গ্রেপ্তার ৫

আটা-ময়দা-সুজি দিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি, গ্রেপ্তার ৫

বাজারে দুষ্প্রাপ্য এমন অ্যান্টিবায়োটিক টার্গেট করতেন তারা। এরপর সেগুলোর মোড়ক থেকে শুরু করে যাবতীয় জিনিসপত্র নকল করে ভেতরে আদা-ময়দা-সুজি ঢুকিয়ে বাজারে ছাড়তেন। এসব নকল অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করা হতো রাজধানীর অদূরে সাভারের একটি কারখানায়। আর পরে তা ট্রাক বা পিকআপে ভরে নিয়ে যাওয়া হতো বরিশালে। সেখানে গুদামজাত করে পরে ধীরে ধীরে বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হতো।

একটি চক্র এভাবে নকল অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করে বাজারজাত করে আসছিল। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল বিভাগ অভিযান চালিয়ে ওই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- শাহীন (৩৪), শহীদুল ইসলাম (৪০), সিরাজুল ইসলাম (৩৬), হৃদয় (২০) ও হুমায়ুন (৩৬)। এসময় তাদের কাছ থেকে চার লাখ ৯৬ হাজার পিস নকল অ্যান্টিবায়োটিক উদ্ধার করা হয়। যার বাজারমূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা। উদ্ধারকৃত অ্যান্টিবায়োটিকগুলো আটা, ময়দা, সুজি ও বিভিন্ন উপাদান দিয়ে তৈরি করা।


ডিবি বলছে, চক্রটি বাজারে থাকা ও বাজার থেকে বিলুপ্ত এমন ওষুধের মধ্যে রিলামক্স-৫০০ ট্যাবলেট, মক্সিকফ-২৫০, সিপ্রোটিম-৫০০ এমজি, এমোক্সস্লিন, জিম্যাক্স, মোনাস-১০ নকল করে ছাড়তো। তারা কাফকা ফার্মাসিউটিক্যালস, ডক্টর টিমস ফার্মাসিউটিক্যালস, জেনিথ ফার্মাসিউটিক্যালস, কুমুদিনি ফার্মাসিউটিক্যালস, ইউনিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের ওষুধ নকল করতো।

সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির ডিবির প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে ডিবির মতিঝিল বিভাগের ডিসি রাজীব আল মাসুদ, মতিঝিল জোনের সাইবার বিভাগের এডিসি নাজমুল ইসলাম ও এসি এরশাদুল রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  


ডিবি প্রধান জানান, গ্রেপ্তার শহীদুল দীর্ঘদিন ধরে বরিশাল কোতয়ালীর নথুল্লাবাদ এলাকায় নকল বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক মজুদ করতেন। সেগুলো বিভিন্ন পরিবহন ও গ্রেপ্তার শাহীনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে আসছিলেন। গ্রেপ্তার হুমায়ুন রাজীব অপসোনিন কোম্পানির বিক্রয়কর্মী হিসেবে চাকরি করতেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ফার্মেসিতে নকল অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করতেন। এছাড়া সিরাজুল ইসলাম ও হৃদয় নকল ওষুধ বিক্রির যাবতীয় কাজে অধিক মুনাফার জন্যে শহীদুলকে সহায়তা করতেন। কারখানায় নকল ওষুধ তৈরি করে সেগুলো কুমিল্লার জনৈক আবু বক্কর বিভিন্ন কুরিয়ারের মাধ্যমে বাজারে সরবরাহ করতেন।


হারুন বলেন, মূলত কুমিল্লার আবু বক্বর এসব নকল ওষুধ তৈরি করে শহীদুলকে দিতেন। তিনি সেগুলো বরিশালে গুদামজাত করে পরে অন্যদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হতো। যেসব ওষুধ কোম্পানি বাংলাদেশে নেই এবং যে ওষধুগুলো বাজারে নেই সেগুলোই তারা তৈরি করে বাজারজাত করত। এছাড়া তারা বিভিন্ন ব্র্র্যান্ডের ওষুধ নকল করে সেগুলোর ভেতরে আটা, ময়দা ও সুজি ভরে রাখত। আমরা তাদের কাছ থেকে দুই কোটি টাকার নকল ওষুধ উদ্ধার করেছি। এর আগেও তারা কোটি কোটি টাকার নকল ওষুধ তৈরি করে বিক্রিও করেছে।

ডিবি প্রধান বলেন, তারা গত আট থেকে ১০ বছর ধরে এই ভেজাল ওষুধ তৈরি করে আসছিল। যারা এসব ওষুধ উৎপাদন করে আমরা তাদেরও খুঁজছি। তাদের নামে এখন পর্যন্ত ১৫টি মামলা রয়েছে। আমরা তাদের তিনজনকে আগেও গ্রেফতার করেছি। তারা জামিনে বেরিয়ে আবারও এই ব্যবসা শুরু করে।

হারুন জানান, এখন পর্যন্ত ৮০টি ইউনানি ওষুধ কোম্পানির ভেজাল ওষুধ তৈরির বিষয়ে তথ্য তার ঔষধ প্রশাসনকে দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে ডিবি।



ডেল্টা টাইমস/সিআর

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
  এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ  
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।

ফোন: ০২-৪৭১২০৮৬১, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।
ফোন: ০২-৪৭১২০৮৬১, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com