ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ৪৬ বছরে চার সমাবর্তন, পঞ্চমের অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা
ইদুল হাসান, ইবি:
|
প্রতিষ্ঠার ৪৫ বছর পেরিয়ে ৪৬ বছরে পা রেখেছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। তবে প্রতিষ্ঠার ৪৬ বছরে এখন পর্যন্ত মাত্র চারটি সমাবর্তন পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ ২০১৮ সালের পর আর কোন সমাবর্তনের মুখ দেখেনি শিক্ষার্থীরা। তবে সাবেক উপাচার্য বিভিন্ন সময় সমাবর্তন আয়োজনের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করতে পারেননি। এ নিয়ে নতুন উপাচার্যের নিকট অনতিবিলম্বে সমাবর্তন আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৩ সালের ২৭ এপ্রিল। এর ৬ বছর পর দ্বিতীয় সমাবর্তন হয় ১৯৯৯ সালের ৫ ডিসেম্বর। তৃতীয় সমাবর্তন ২০০২ সালের ২৮ মার্চ ও সর্বশেষ ৪র্থ সমাবর্তন ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। তারপর আর কোন সমাবর্তনের মুখ দেখেনি শিক্ষার্থীরা। তাই পঞ্চম সমাবর্তনের অপেক্ষায় রয়েছেন প্রায় ১২ হাজার গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নিয়মিত সমাবর্তন না হওয়ায় অর্জিত ডিগ্রির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাচ্ছে না তারা। মূল সনদপত্রের পরিবর্তে সাময়িক সনদপত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন তারা। সর্বশেষ সমাবর্তনের তথ্য মতে, ২০১৮ সালের সমাবর্তনে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার গ্র্যাজুয়েট, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রিধারী নিজেদের মূল সনদপত্র হাতে পেয়েছিলেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত স্নাতক ও ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত স্নাতকোত্তর এবং ২৩৬ তম সিন্ডিকেটে অনুমোদন প্রাপ্ত এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রিধারীরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। এদিকে বর্তমানে ২০১৭-১৮ বর্ষের অধিকাংশ বিভাগের স্নাতক সম্পন্ন হওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বিভাগের স্নাতকোত্তর সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি বর্ষের এমফিল ও পিএইচডি গবেষকরা নিয়েছেন তাদের ডিগ্রি। তবে তাদের কেউই পাননি আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দা'ওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল বাকী বলেন, সমাবর্তন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্য, যা শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ পরিশ্রমের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদান করে। এটি শুধু অর্জনের উদযাপন নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্য প্রেরণার উৎসও। ছয় বছরে সমাবর্তন না হওয়া হতাশাজনক। এটি শিক্ষার্থীদের অধিকার ও গৌরবের অংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ-এর পরিচালক ও দা'ওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. ইকবাল হোছাইন জানান, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য সমাবর্তন প্রত্যেক কাঙ্খিত বস্তু। এতে শিক্ষার্থীরা যে গাউন পড়ে এর মাধ্যমে নিজেদেরকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। বহির্বিশ্বে মূলত অনুষদভিত্তিক সমাবর্তন আয়োজন করার ফলে নিয়মিতই তা করতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশের দৃষ্টিভঙ্গি এক্ষেত্রে ভিন্ন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি অনুষদভিত্তিক এটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিতে পারেন তাহলে সমাবর্তন যথাযথভাবেই আয়োজন করা সম্ভব বলে মনে করছেন তিনি। সমাবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ জানিয়েছেন, সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার। বিষয়টি আমাদের ভাবনায় রয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে সমাবর্তন করার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি দরকার হয়। এতে সময়ক্ষেপণ হয়। নিয়মিত সমাবর্তনের জন্য অনুষদভিত্তিক বাস্তবায়নের বিষয়টি নিয়ে আমরা ভাবছি। ডিনদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তীতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। ডেল্টা টাইমস/ইদুল হাসান/সিআর/এমই
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |