স্কুলে ভর্তিতে ৬৩ শতাংশই কোটা, অভিভাবকদের আপত্তি
ডেল্টা টাইমস ডেস্ক:
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:১০ এএম

স্কুলে ভর্তিতে ৬৩ শতাংশই কোটা, অভিভাবকদের আপত্তি

স্কুলে ভর্তিতে ৬৩ শতাংশই কোটা, অভিভাবকদের আপত্তি

সরকারি স্কুলে ভর্তিতে এবারও লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। লটারি প্রক্রিয়া অনিশ্চয়তাপূর্ণ হওয়ায় ভালো স্কুল পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় থাকে শিক্ষার্থীরা। লটারির মাধ্যমে ভর্তিতে ‘অসুস্থ’ প্রতিযোগিতা কমানোর কথা বলা হলেও বিভিন্ন কোটা রাখা নিয়ে আপত্তি রয়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।

প্রকাশিত ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী— এবারও স্কুলে ভর্তিতে ৬৩ শতাংশ কোটা বণ্টন পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। এরমধ্যে ক্যাচমেন্ট এরিয়া কোটা ৪০ শতাংশ। এ কোটা নিয়ে আপত্তি রয়েছে অনেক অভিভাবকের। বিশেষ করে যারা কর্মসূত্রে ঢাকায় অস্থায়ীভাবে বসবাস করেন, তারা এ কোটা পদ্ধতি বাতিল চান।

তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির কর্মকর্তাদের দাবি, বিশৃঙ্খলা ও ভোগান্তি এড়াতে ক্যাচমেন্ট এরিয়া কোটা রাখা হয়। এতে শিশুরা নিজের আশপাশের এলাকার বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পান। বাকি অন্য কোটা খুবই কম।

এবার প্রকাশিত ভর্তি নীতিমালায় দেখা যায়, মোট শূন্য আসনের ৪০ শতাংশ ক্যাচমেন্ট এরিয়া কোটা রাখা হয়েছে। অর্থাৎ, স্কুলের আশপাশের এলাকার বাসিন্দা যারা, তাদের সন্তানদের জন্য-এ কোটা রাখা হয়। এ কোটায় ভর্তির জন্য স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলের কার্যালয় থেকে প্রত্যয়নপত্র নিতে হয়। অনেক সময় যারা ভাড়াটিয়া, তাদের এ প্রত্যয়নপত্র নিতে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়।

রাজধানীর মালিবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন ফাহমিদুল হক। তার সন্তানকে গত বছর লটারিতে পছন্দের স্কুলে ভর্তির চেষ্টা করেও পারেননি। এবারও তিনি সন্তানের জন্য আবেদন করবেন। অভিভাবক ফাহমিদুল হক গত বছর ক্যাচমেন্ট এরিয়া কোটা নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছিলেন বলে জানান।

তিনি বলেন, ‘এ কোটার ক্ষেত্রে অনেকে অনলাইনে জালিয়াতি করেন। ভিন্ন ভিন্ন এলাকার বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও অনলাইন আবেদনের সময় ক্যাচমেন্ট এরিয়া সুবিধাজনক এলাকা দেন। সন্তান লটারিতে টিকে গেলে তখন মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে নেন। এটা এক ধরনের জালিয়াতি।’

এদিকে, ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী বাকি যে ২৩ শতাংশ কোটা সেগুলো হলো- মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীন দপ্তর-সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ১০ শতাংশ, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের ২ শতাংশ, অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর যমজ ও সহোদর ভাই-বোনরা ৫ শতাংশ কোটায় সংরক্ষিত আসনে ভর্তির সুযোগ পাবেন।

অন্যদিকে, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য ১০ শতাংশ আসন অবশ্যই বরাদ্দ রাখতে হবে।

নীতিমালার বাইরেও অলিখিত এক কোটা রয়েছে। সেটা হলো-দূর থেকে বদলি হয়ে আসা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানের জন্য ৫ শতাংশ আসন কোটায় সংরক্ষণ করা হয়। আর সরকারি হাইস্কুলগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীদের সন্তানরাও কোটা সুবিধা নিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির সুযোগ পাবেন।

মাউশির মাধ্যমিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, যদিও আমি শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা, তারপরও আমার মনে হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীন দপ্তর-সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য যে কোটা রাখা হয়েছে, সেটার প্রয়োজন নেই। যদিও সেটা খুবই অল্প। আর ক্যাচমেন্ট এরিয়ার বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা রয়েছে। জালিয়াতি হয় বলেও তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। এক্ষেত্রে নিয়ম কঠোরভাবে মানতে হবে। তাহলে এ কোটার নেতিবাচক দিক নেই।

জানতে চাইলে মাউশির মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বি এম আব্দুল হান্নান বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে সভা করে এ নীতিমালা ঠিক করা হয়। এবার যে নীতিমালা করা হয়েছে, সে অনুযায়ী লটারির মাধ্যমে ভর্তি করানো হবে। যদি এ নিয়ে কোনো আপত্তি থাকে বা ভবিষ্যতে ওঠে, তাহলে মন্ত্রণালয় আলোচনাসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে।


ডেল্টা টাইমস/সিআর/এমই

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
  এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ  
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।

ফোন: ০২-২২৬৬৩৯০১৮, ০২-৪৭১২০৮৬০, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।
ফোন: ০২-২২৬৬৩৯০১৮, ০২-৪৭১২০৮৬০, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com