ভালুকায় মসজিদের ওয়াকফকৃত জমি বিক্রির অভিযোগ
ভালুকা (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা
|
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ৭নং মল্লিকবাড়ী ইউনিয়নের বর্তা মধ্যপাড়া বায়তুন নুর জামে মসজিদের নামে ওয়াকফ কৃত জমি প্রতারণার মাধ্যমে বিক্রি করে ১০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে উপজেলা র্নিবাহী অফিসার বরাবর ওই এলাকার ৬২ জন মুসল্লি স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৭নং মল্লিকবাড়ী ইউনিয়নের বর্তা গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে একিন আলী ও একুব আলী বর্তা বায়তুন নুর জামে মসজিদ ও তৎসংলগ্ন ফুরকানিয়া আশরাফিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার নামে ৫ জুলাই ১৯৭৫ ইং সনে ৭৪৫৮ ও ৭৪৫৯ নং দলিল দ্বারা সাড়ে ৭৮ শতাংশ জমি ওয়াকফ দলিল রেজিস্ট্রী করে দেন। রেজিস্ট্রীকৃত ওয়াকফ দলিলে উল্লেখ করেন যে, একিন আলী ও একুব আলী জীবিত থাকা কালিন সময়ে ওয়াকফকৃত জমিতে মোতুয়াল্লী থাকিয়া ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ ও উক্ত জমির দেখা শুনা করিয়া যাইবে এবং একিন আলী ও একুব আলী মৃত্যুবরণ করিলে তাহার বংশের মধ্য যাহাকে উপযুক্ত মনে করিবে তাহাকে মসজিদ কমিটি মোতুয়াল্লী নিয়োগ করিয়া মসজিদ ও মাদ্রাসা রক্ষনাবেক্ষনে সহযোগিতা করিবে। বর্তা গ্রামের আঃ বারেকের ছেলে মসজিদ ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল ৩ ফেব্ররুয়ারী ২০২০ ইং তারিখে সাদা রেজুলেশন বহিতে স্বাক্ষর নিয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটির অনুমোদন দেখিয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর আসাদুর রহমান কিরন এর নিকট গোপনে ১৯ ফেব্ররুয়ারী ২০২০ সনে ১৪৭১ নং দলিল মূলে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে ৭৮ শতাংশ জমি ৪৮ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা মূল্য নির্ধারণ করিয়া ১৫ লক্ষ টাকা বায়না গ্রহণ করিয়া ৩৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা বাকি রাখিয়া বায়না নামা দলিল রেজিস্ট্রী করিয়া দেন। মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটি ও মহল্লার লোকজন এ বিষয়টি সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানতে চাইলে তিনি ৫ লক্ষ টাকা বায়না গ্রহণ করার কথা স্বীকার করেন। ওই সাধারণ সম্পাদক প্রতারণার মাধ্যমে কম মূল্যে জমি বিক্রি করেও ১০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। এলাকাবাসী আরো জানান, মসজিদের নিজস্ব জমির উপর একটি অফিস নির্মাণ করে সরকারী অনুমোতিবিহীন সমিতির নামে রমরমা সুদের ব্যবসা করে যাচ্ছেন ওই সাধারণ সম্পাদক। ওয়াকফকৃত জমি দাতা মৃত একিন আলীর বড় ছেলে আব্দুছ ছালাম জানান, আমার বাবা ও চাচা মসজিদ ও মাদ্রাসার নামে সাড়ে ৭৮ শতাংশ জমি দেওয়ার পরেও আমাদের কাউকে মসজিদ কমিটিতে রাখা হয়নি এটা দুঃখজনক। আমরা এ বিষয়ে আইনি সাহায্যের জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি। মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটির কোষাধ্যক্ষ রফিকুল আলম মাস্টার জানান, জমি বিক্রির বিষয়ে কোন সিদ্ধাস্ত আমাদের কমিটির হয়নি। একটি মিটিংএ সাদা রেজুলেশনে উপস্থিতিদের স্বাক্ষর নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে রেজুলেশন তৈরি করে জমি বিক্রি করেছেন। আমি নাম মাত্র ক্যাশিয়ার আমার কাছে কোন দিন কোন টাকা পয়সা জমা হয়নি। বায়না পত্র দলিলে ৪৮ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা উল্যেখ থাকলেও অভিযোক্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল জানান, আমি কমিটির সম্মতি নিয়ে রেজুলেশনের মাধ্যমে মসজিদের উন্নয়নের জন্য ১২ লক্ষ টাকা জমি বিক্রি করে ৫ লক্ষ টাকা বায়না গ্রহণ করেছি এবং আমি সুদের ব্যবসা করি না একটি এনজিও পরিচালনা করি। জমির ক্রেতা আসাদুর রহমান কিরন এর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার ০১৭১৩-০৬০৬৩০ তে ফোন দিয়ে রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান চৌধুরী মাসুদ জানান, জমি বিক্রয়ের বিষয়টি সাধারণ সম্পাদক আমাকে অবহিত করেছেন। অবৈধ ভাবে যদি মসজিদ ও সাদ্রাসার কোন ক্ষতি সাধারণ সম্পাদক করে থাকে তাহলে তাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ কামাল জানান, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। দেশের করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডেল্টা টাইমস/আশিকুর রহমান শ্রাবণ/সিআর/জেড এইচ |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |