কবরস্থানের ওপর দিয়ে রেললাইন, ভোগান্তিতে ৮ গ্রামের মানুষ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
|
আখাউড়ায় শত বছরের পুরানো কবরস্থানের ওপর দিয়ে আখাউড়া-লাকসাম রেললাইনের কাজ চলছে। লাশ দাফন করতে পারছে না ৮টি গ্রামের মানুষ। অন্য কোন স্থানে কবরস্থান না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ। ওই গ্রামগুলোতে কোন লোক মারা গেলে স্বজনরা শোকের চাইতে লাশ দাফন নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। অন্য স্থানে লাশ দাফন করতে গিয়ে লাঞ্চনা ও বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে স্বজনদের। জানা গেছে, আখাউড়া পৌরশহরের চন্দনসার মৌজার বাগানবাড়ির কবরস্থানটি প্রায় শত বছর ধরে চন্দনসার, শোভার পুকুরপাড়, শান্তিনগর, বড়বাজার, সাহাপাড়া, লালবাজার ও মুন্সিবাড়ির লোকজন লাশ দাফন করে আসছিল। বাগানবাড়ির কবরস্থানটি চট্টগ্রাম-ঢাকা ও সিলেট-চট্টগ্রামের রেললাইনের পাশে হওয়ায় ২০১৭ সালে আখাউড়া-লাকসাম ডাবল রেললাইনের প্রকল্পের অধীনে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে ওই কবরস্থানে কোন লাশ দাফন করতে দেয়া হয়নি। বর্তমানে কবরস্থানের কোন চিহৃ নেই। ![]() কবরস্থানের ওপর দিয়ে রেললাইন, ভোগান্তিতে ৮ গ্রামের মানুষ স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন ২০১৭ অনুসারে, ধর্মীয় উপাসনালয়, কবরস্থান এবং শ্মশান হিসাবে ব্যবহৃত কোনো ভূমি অধিগ্রহণ করা যাইবে না: তবে শর্ত থাকে যে, জনপ্রয়োজনে বা জনস্বার্থে একান্ত অপরিহার্য হলে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, প্রত্যাশিত ব্যক্তি বা সংস্থার অর্থে স্থানান্তর ও পুনর্নির্মাণ /বিকল্প কোন ব্যবস্থা করে কেবল উক্ত সম্পত্তি অধিগ্রহণ করা যাইবে। উক্ত আইনের প্রেক্ষাপটে বিকল্প কবরস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২০১৭ সালে প্রকল্প পরিচালক বরাবরে আবেদন করা হয়। তারপর থেকে বার বার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দারস্থ হয়েও কোন সুরাহা না হওয়ায় পুনরায় গত ২৫ শে আগস্ট ২০২০ ইং তারিখে প্রকল্প পরিচালক বরাবরে আরেকটি আবেদন করা হয়। তারও কোন সুরাহা হয়নি। চন্দসার কবরস্থান কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও আখাউড়া পৌরসভার ৭নং ওর্য়াডের কাউন্সিলর আতিকুর রহমান বলেন, রেললাইনের পাশে অবস্থিত কবরস্থানে ৮ গ্রামের হাজার হাজার মানুষের কবর দেয়া হতো এই কবরস্থানটিতে ব্রিটিশ আমল হতে লাশ দাফন করে আসছিল। আখাউড়া-লাকসাম ডবল রেললাইনের প্রকল্পে কবরস্থানটি পড়ার কারণে এখানকার মানুষজন লাশ কবর দিতে বিপাকে পড়ছে। যখন কবরস্থানটি ভাঙা হয় তখন আমরা বাধা দিয়ে ছিলাম। আমাদের বলা হয়েছিল ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। কিন্তু এখনো দেয়া হয়নি। বর্তমানে কোন লোক মারা গেলে ট্রাকে করে ৪ কিলোমিটার দুরে খড়মপুর মাজারের কবরস্থানে লাশ দাফন করতে হচ্ছে। চন্দনসার গ্রামের আবদুল মতিন বলেন, এক বছর আগে আমার নানি মারা যায়। পাশের দেবগ্রামে এক কবরস্থানে লাশ দাফন করতে নিয়ে গেলে ওখানকার এক ব্যক্তি দাফন কাজে বাধা দেয়। ওই ব্যক্তি বলে দেয় আর লাশ নিয়ে আসলে পানিতে ভাসিয়ে দিবে। চন্দসার গ্রামের বাসিন্দা ও লেখক আলী মাহমেদ বলেন, অধিগ্রহণ আইনে আছে বিকল্প কবরস্থান তৈরি করে তারপর অধিগ্রহণকৃত স্থানে কাজ করা। কিন্ত এখানে এ নিয়ম মানা হয়নি। ওই ৮টি গ্রামের কেউ মারা গেলে লাশ দাফন করতে সমস্যা হচ্ছে। আখাউড়া-লাকসাম ডাবল রেললাইনের প্রকল্প পরিচালক মো. রমজান আলী বলেন, ফাইলটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলেই টাকা পাবে কবরস্থান কমিটির লোকজন। ডেল্টা টাইমস্/মোঃসাইফুল ইসলাম/এম আর/সিআর/জেড এইচ |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |