হৃদয়ে ধারণ হোক একুশের চেতনা
মু. ইমরান হাসান
|
বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়ে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছিল। বাঙালির সেই আত্মত্যাগ আজ বিশ্ব ইতিহাসের এক সোনালি অধ্যায়। এ আত্মত্যাগ মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় বিশ্ব সমাজকেও অনুপ্রাণিত করেছে। সালাম, জব্বার, বরকত, রফিকসহ শহীদদের রক্তে লেখা ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। বাংলা ভাষা আমাদের অস্তিত্বের মূর্তপ্রতীক। মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে তৎকালীন স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে আসে জনগণ। সরকারের নির্দেশে পুলিশ নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে। ঘটনাস্থলে শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত জব্বার প্রমুখ। অবশষে জনতার দাবি তারা মেনে নিতে বাধ্য হয়। রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মাতৃভাষা আজ আমাদের অনেকের কাছে অবহেলার পাত্র। সেটা যে শুধুমাত্র সাধারণ মানুষের কাছে তা নয়। অনেক বিদ্বান ব্যক্তির কাছেও। বাংলাভাষাকে আজ আমরা খিচুড়িতে পরিণত করেছি। বাংলিশ করে ছেড়েছি। বিদেশী ভাষা শিক্ষার বিরোধী নই আমি। তবে পঠন, পাঠন, লেখনে, বলনে মাতৃভাষার চর্চার পক্ষে। অমর একুশে আজ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রের সর্বস্তরে বাংলাভাষার চর্চা নিশ্চিত হয়েছে? উত্তর যদি না হয় তবে এটা কি মাতৃভাষার প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শন বলা যায়? সামান্য মুঠোফোনে ক্ষুদেবার্তা বাংলা লিখেন ইংরাজী বর্ণে। প্রশ্ন হল- আমাদের কি নিজস্ব বর্ণমালা নেই? পরের স্কন্ধে ভর দিয়ে আমরা আর কতকাল চলব? সচেতন মহল যদি স্বজ্ঞানে করেন এই কাজ তবে সাধারণ মানুষ কি করবে? মনে রাখা উচিৎ বিশ্বে শুধুমাত্র আমরাই মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার্থে প্রাণোৎসর্গ করেছি। এবাবের একুশের অঙ্গীকার হোক মাতৃমাভাষা বাংলার মর্যাদা সমুন্নত করা। কথ্য ও লেখ্য দু’মাধ্যমেই খাঁটি বাংলা চর্চার অভ্যাস গড়ে তুলি। তবেই ভাষাশহীদের আত্মদান স্বার্থকতা লাভ করবে। বছরে একদিন ঘটা করে অনুষ্ঠান পালনে কোন কৃতিত্ব নেই যদি বাংলাভাষার সঠিক চর্চা না হয়। বিজাতীয় ভাষা আমরা প্রয়োজনে অবশ্যই শিখব। দরকারবোধে ব্যবহারও করব। তবে সর্বাবস্থায় মাতৃভাষায় থাকবে অগ্রাধিকার। সর্বোপরি প্রত্যেক বাংলা মায়ের সন্তানকে হৃদয় হতে বাংলা ভাষাকে ধারণ করতে হবে, চর্চা করতে হবে এবং বিশ্ববাসীর কাছে এ ভাষার সৌন্দর্য তুলে ধরতে হবে। ডেল্টা টাইমস্/মু. ইমরান হাসান/সিআর/জেড এইচ
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |