লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ফিটনেস দেয়া সার্ভেয়ারকে বরখাস্তের দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
|
ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চকে চলাচলের অনুমতি দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট শিপ সার্ভেয়ারকে অবিলম্বে বরখাস্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে ১৫টি বেসরকারি সংগঠন। মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর)) সকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধন ও নাগরিক সমাবেশ থেকে এই দাবি জানানো হয়। ‘এমভি অভিযান-১০’ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিপুলসংখ্যক প্রাণহানির পাঁচদিন পরও তাঁকে স্বপদে বহাল রাখায় সমাবেশ থেকে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করা হয়। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়ন আন্দোলন, নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি, পুরনো ঢাকা পরিবেশ উন্নয়ন ফোরাম, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসাফ) ও মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্রসহ ১৫টি সংগঠন এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। কর্মসূচি থেকে নৌখাতের উন্নয়নে সরকারকে সহযোগীতা প্রদানের জন্য একটি বেসরকারি তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। পবা চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে ও নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়ন আন্দোলনের সদস্যসচিব আমিনুর রসুল বাবুলের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান, নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, পুরনো ঢাকা পরিবেশ উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন, নাসাফের সাধারণ সম্পাদক তৈয়ব আলী, মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, নোঙর-এর প্রধান নির্বাহী সুমন শাম্স প্রমুখ। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর, দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চের বেঁচে যাত্রী এবং তদন্ত কমিটির সদস্যদের বক্তব্যের বরাত দিয়ে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এমভি অভিযান-১০ লঞ্চটি অবকাঠামোগতভাবে ও যান্ত্রিক দিক থেকে যথেষ্ট ত্রুটিপূর্ণ ছিল। আগুনের সূত্রপাতও হয়েছে লঞ্চটির ইঞ্জিন রুম থেকে। এছাড়া লঞ্চের ক্যান্টিন ছিল ইঞ্জিন রুমের পাশে এবং তার পাশেই ছিল কয়েক ব্যারেল জ্বালানি তেল। এ ধরনের নৌযান কোনোভাবেই ফিটনেস সনদ পেতে পারে না। বক্তারা বলেন, এতোকিছু সত্ত্বেও নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের সদরঘাট কার্যালয়ের ‘ইঞ্জিনিয়ার এ্যান্ড শিপ সার্ভেয়ার’ মাহবুবুর রশিদ মুন্না নৌযানটিকে ফিটনেস প্রদানের মাধ্যমে চলাচলের সুযোগ করে দিয়েছেন। যে কারণে ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চটি দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে বিপুলসংখ্যক যাত্রীর প্রাণহানি ঘটেছে। সুতরাং মর্মান্তিক এই ঘটনার জন্য প্রথমত: সংশ্লিষ্ট শিপ সার্ভেয়ারই দায়ী। এটি নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয়; মনুষ্যসৃষ্ট ট্রাজেডি তথা হত্যাযজ্ঞ। দায়িত্বে অবহেলাজনিত কারণে এই হত্যাযজ্ঞের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে অবিলম্বে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহারপূর্বক বরখাস্ত এবং তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের দাবি জানান বক্তারা। এছাড়া মানববন্ধন থেকে এমভি অভিযান-১০ ট্রজেডির জন্য মালিক, মাস্টার ও ড্রাইভারসহ দায়ী অন্যদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, নিহত ও আহত পরিবারগুলোকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও এই টাকা লঞ্চমালিকের কাছ থেকে আদায় এবং ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। গত ২৫ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা-বরগুনা নৌপথের ঝালকাঠির সুগন্ধ্যা নদীতে যাত্রীবোঝাই ‘এমভি অভিযান-১০’ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া গেছে। ঢাকা ও বরিশালে হাসপাতালে প্রায় ১০০ যাত্রী চিকিৎসাধীন আছেন। নিখোঁজ রয়েছেন শতাধিক। ডেল্টা টাইমস্/সিআর/আরকে |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |