লিখিত অভিযোগ
প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সামনে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীকে হেনস্থা ইবি শিক্ষকের
ইবি প্রতিনিধি:
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫, ১১:৩১ এএম আপডেট: ২১.০১.২০২৫ ১১:৪১ এএম

প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সামনে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীকে হেনস্থা ইবি শিক্ষকের

প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সামনে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীকে হেনস্থা ইবি শিক্ষকের

 ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রথম বর্ষের জুনিয়রদের সামনে মাস্টার্সের এক সিনিয়র শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সোমবার বিচার চেয়ে ছাত্র-উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। একইভাবে বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের কাছে অভিযোগ দিতে যান তিনি। তবে সেখানে দায়িত্বরত সহকারী রেজিস্ট্রার মুক্তার হোসেন অভিযোগপত্রের প্যাটার্ন নিয়ে বারবার ভুল ধরে কালক্ষেপণ করেন। এরই মধ্যে বিভাগটির শিক্ষকরা বিষয়টি টের পেয়ে ভুক্তভোগীকে ডেকে ঘটনা মীমাংসার চেষ্টা করেন। এদিকে, ভুক্তভোগীর অভিযোগ দিতে আসার খবরটি ডিন অফিসের মুক্তারই শিক্ষকদের জানিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন। অন্যদিকে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী একই বিভাগের মাস্টার্স ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী জানান, গত শনিবার (১১ জানুয়ারি) ড. কামাল উদ্দিন স্যারের ক্লাস ছিল। আমি ও আমার এক বন্ধু স্যারকে ক্লাসের জন্য ডাকতে গেলে তিনি 'একটু পরে আসবেন' বলে আমাদের বসতে বলেন। প্রায় ৪০-৪৫ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পরও তিনি ক্লাসে না আসায় অন্যদের সাথে কথা বলে পুনরায় ডাকতে যাই। এসময় তিনি আমার ওপর বেশ উত্তেজিত হয়ে চিৎকার শুরু করেন। তিনি আমাকে বলেন, ‘এতো অধৈর্য হচ্ছি কেন?’ ‘বাবা-মা ধৈর্য শিক্ষা দেয়নি,’ ‘এসব পারিবারিক শিক্ষা, বেয়াদব।’ আমি কিছু বলতে যেতেই তিনি বলেন ‘নো টক’। সে সময় তিনি ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের জুনিয়রদের ক্লাস নিচ্ছিলেন। ক্লাস ভর্তি জুনিয়রদের সামনে তিনি আমাকে এবং আমার পরিবারকে চূড়ান্তভাবে অপমান অপদস্ত করেন। তার কথায় ব্যথিত হয়ে দরজা লাগিয়ে দিতেই তিনি জুনিয়রদের সাথে নিয়ে উচ্চ শব্দে হাসাহাসি শুরু করেন। এর ১০-১৫ মিনিট পরে তিনি আমাদের ক্লাসে ডেকে উচ্চবাক্যে চিৎকার করতে থাকেন। তিনি আমাকেই ভুল প্রমাণ করতে থাকেন, কিন্তু আমি প্রতিবাদ করলে তিনি কিছুটা নরম হন।

ভুক্তভোগী আরো জানান, সেদিন বিভাগের সভাপতির মিটিং থাকায় তার সাথে দেখা করতে পারিনি। পরে সন্ধ্যায় সভাপতিকে কল করে বিষয়টি অবগত করলে তিনি আমাকে পরদিন রবিবার বিভাগে আসতে বলেন। আমার ব্যস্ততার কারণে আমি তাকে রবিবার বিভাগে না আসতে পারার কথা জানাই। পরে গত শনিবার (১৮ জানুয়ারি) আমি বিভাগে আসলেও এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘গতকাল ছাত্র-উপদেষ্টা ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে যাই। কিন্তু বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে সেখানকার কর্মকর্তা মুক্তার আমার অভিযোগপত্রের প্যাটার্ন নিয়ে বারবার ভুল ধরে কালক্ষেপণ করেন। তিনি পরপর তিনবার আমাকে ফিরিয়ে দেন। এর মধ্যেই বিভাগের শিক্ষকরা খবর পেয়ে আমাকে দেখা করতে ডাকেন। আমার মনে হয় ওই ডিন অফিসের কর্মকর্তাই শিক্ষকদের বিষয়টি জানিয়েছিলেন। পরে দেখা করতে গেলে সেখানে ড. কামাল উদ্দিন স্যারও উপস্থিত হন। তিনি আমাকে বলেন, এ বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে অনেক দূর চলে যাবে, এটা নিয়ে আর না আগাতে। পরে তিনি মাফ চেয়ে এ বিষয়ে অভিযোগ দিতে নিষেধ করেন।’

এ বিষয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অফিসের সহকারী রেজিস্ট্রার মুক্তার হোসেন বলেন, ‘ডিন ছুটিতে থাকায় আমি তাকে অভিযোগপত্রটি পুনরায় ভালোভাবে লিখে আনতে বলি। তিনি আমাকে বলেন তাহলে কালকে জমা দেই আবার। এছাড়া এ বিষয়ে আর কিছু জানি না।’

অভিযুক্ত পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘এটা সত্য, প্রথম বর্ষের ক্লাসে আমি তার সাথে রাগ করেছিলাম। রাগ বলতে তাকে আমি বেয়াদব বলেছিলাম। তবে এটার জন্য আমি সবার সামনে তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে গতকাল অভিযোগ জমা দিয়েছে। আমি অফিসে না থাকায় সেটি দেখতে পারিনি। আজ বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, এর আগেও বিভিন্ন সময় অভিযুক্ত ওই শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাথে অসদাচরণ করেছেন বলেও অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ মাস্টার্স শেষ করে ক্যাম্পাস ছাড়লেও পরিসংখ্যান বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা এখনো মাস্টার্স শেষ করতে পারেনি। শিক্ষকদের আন্তরিকতার অভাবেই এই সেশনজটের কবলে পরিসংখ্যান বিভাগ বলে মনে করছেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।


ডেল্টা টাইমস/ইদুল হাসান/সিআর/এমই

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
  এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ  
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।

ফোন: ০২-৪৭১২০৮৬০, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।
ফোন: ০২-৪৭১২০৮৬০, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com