সচেতন হই, টিকিয়ে রাখি দাম্পত্য সম্পর্ক
আফ্রিয়া অলিন
|
![]() সচেতন হই, টিকিয়ে রাখি দাম্পত্য সম্পর্ক বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স অনুযায়ী, ২০১১ সালে দেশে তালাকের হার ছিল প্রতি হাজারে ০.৭, যা ২০২১ সালে বেড়ে হয়েছে ১.৪। অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন ঢাকায় ৩৭টি বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে এবং প্রতি ৪০ মিনিটে একটি সংসার ভেঙেছে। ২০২৩ সালে তালাকের হার ছিল প্রতি ১০ হাজারে ১১টি। গবেষণা অনুসারে, ২৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী নারী-পুরুষদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের হার সবচেয়ে বেশি। বিবাহ বিচ্ছেদের কারণসমূহ ✅ পরকীয়া ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় পরকীয়া বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম প্রধান কারণ। পরিসংখ্যান বলছে, পরকীয়ার কারণে সারাদেশে ২৩% ও ঢাকায় ২৮% তালাক সংঘটিত হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার ও বৈদেশিক সংস্কৃতির নেতিবাচক প্রভাব মানুষকে পরকীয়ার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ভালো সঙ্গী থাকার পরও মানুষ অতৃপ্ত থেকে অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে, যা দাম্পত্য জীবনে চরম অস্থিরতা তৈরি করছে। ✅ নারীর আত্মনির্ভরতা ও দাম্পত্য জটিলতা আগে নারীরা শিক্ষার অভাবে স্বামীর যেকোনো আচরণ মেনে নিতেন। এখন নারীশিক্ষার হার বাড়ার ফলে তারা সচেতন ও আত্মনির্ভরশীল হয়েছেন, যা তাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ে সাহায্য করছে। তবে এই স্বাধীনতা কখনো কখনো দাম্পত্য কলহের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। করোনা-পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে, ৭০% তালাকের আবেদন এসেছে নারী পক্ষ থেকে, যার প্রধান কারণ স্বামীর পরকীয়া ও অবহেলা। ✅ অর্থনৈতিক বৈষম্য ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা বর্তমানে মানুষের লোভ-লালসা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা বেড়েছে। নারীরা অনেক সময় স্বামীর আয়ের চেয়ে বেশি চাহিদা পোষণ করেন, যা দাম্পত্য জীবনে টানাপোড়েন তৈরি করে। কর্মজীবী নারীরা স্বাবলম্বী হওয়ার পর স্বামীকে অসম্মান বা অবহেলা করতেও দেখা যায়, যা বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ✅ নৈতিক অবক্ষয় ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আসক্তি নৈতিক মূল্যবোধের অভাবের কারণে অনেকেই বিবাহিত সম্পর্কের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা দেখান না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহারে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক বোঝাপড়া কমে যাচ্ছে, যা ভুল বোঝাবুঝি ও দাম্পত্য কলহ বাড়াচ্ছে। বিবাহ বিচ্ছেদ প্রতিরোধে করণীয় ✔ নৈতিক মূল্যবোধ ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা ✔ সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহার পরিহার করা ✔ পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখা ✔ স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বৃদ্ধি করা ✔ সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করা ✔ পরস্পরের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া ও বোঝাপড়ার মানসিকতা তৈরি করা পরিবার আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সুতরাং, সম্পর্ক রক্ষায় দায়িত্বশীল হই, বিবাহ বিচ্ছেদ প্রতিরোধে সচেতন হই। লেখক : শিক্ষার্থী, সমাজকর্ম বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা। ডেল্টা টাইমস্/আফ্রিয়া অলিন/সিআর |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |