মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার স্থপতি নেতানিয়াহু
খন্দকার আপন হোসাইন:
প্রকাশ: সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১০:৩৬ এএম

মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার স্থপতি নেতানিয়াহু

মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার স্থপতি নেতানিয়াহু

রাজনীতির অদৃশ্য মঞ্চে কিছু মানুষ নায়ক হয়ে আসেন। কেউ কেউ মহাকাব্যের মতো চিরকাল ইতিহাসের পৃষ্ঠায় লেখা থাকেন। এমনও কেউ কেউ থাকেন, যারা কৌশলে, ক্ষমতার মোহে বা সাম্রাজ্যবাদী নীতির ঘূর্ণিতে অস্থিরতার স্থপতি হয়ে ওঠেন। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু—সমসাময়িক বিশ্বরাজনীতিতে এমনই এক নাম। তার ছায়ায় মধ্যপ্রাচ্য আজ ধোঁয়াশায় ঢাকা, রক্তে রঞ্জিত। ইতিহাস বলছে, এই নেতার নেতৃত্বে ইসরাইল একদিকে সামরিকভাবে শক্তিশালী হয়েছে অপরদিকে মানবিকতা হারিয়ে নির্যাতন ও দমন-পীড়নের এক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। ফিলিস্তিনের মাটিতে শিশুর কান্না, মায়ের আর্তনাদ, ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া মানুষের আর্তনাদ নেতানিয়াহুর নিষ্ঠুরতার এক অনিবার্য ফল। পূর্বসূরিদের মতোই তিনি মধ্যপ্রাচ্য সংকটকে নিজের মতো করে ব্যবহার করেছেন। শান্তি চুক্তির কথা বলে আড়ালে যুদ্ধের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন। গাজার মতো জায়গায় মৃত্যুকে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা পরিনত করেছে নেতানিয়াহু। প্রতিশোধ, প্রতিরোধ, দখলদারিত্ব এবং ক্ষমতার রাজনীতি তার শাসনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে। বর্তমানে অবশ্য বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিজেও সংকটে রয়েছেন। দুর্নীতির অভিযোগ, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অভ্যন্তরীণ কলহ তাকে রাজনৈতিকভাবে চাপে ফেলেছে। একদিকে বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ, অন্যদিকে প্রতিপক্ষের তীব্র সমালোচনা তার জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ণ করছে। হাজারো ইসরাইলি রাস্তায় নেমে এসেছে তার পদত্যাগের দাবিতে। এককালের জনপ্রিয় নেতার জনপ্রিয়তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ।

ইসরাইলের জনগণের মনোভাব এখন দুই ভাগে বিভক্ত। একদল মনে করে নেতানিয়াহু দেশকে নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়েছেন। আরেকদল মনে করে তার কঠোর নীতিই আজ ইসরাইলকে আরও সংকটময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। নেতানিয়াহুর বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনা ইসরাইলিদের মনে গভীর অনাস্থা সৃষ্টি করেছে। এই বিতর্ক এখন ইসরাইলি রাজনীতির প্রধান ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। নেতানিয়াহু গাজা উপত্যকা মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করেছে। প্রতিটি বোমা বিস্ফোরণ নতুন নতুন ইতিহাসের জন্ম দেয়। গাজার শিশুদের স্বপ্ন ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে যায়। হামাস এবং ইসরাইলের এই সংঘাত যুগের পর যুগ ধরে চললেও নেতানিয়াহুর কৌশলী রাজনীতি এটিকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করেছে। হামাসের প্রতি তার নীতি বরাবরই কঠোর। কিন্তু এই কঠোরতার আড়ালে গোপন সমঝোতা, রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়া এবং আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তার তার প্রধান লক্ষ্য ছিল। ফিলিস্তিনি জনগণের উপর ক্রমাগত হামলা এবং তাদের বেঁচে থাকার অধিকার হরণ করার মধ্য দিয়ে নেতানিয়াহু মধ্যপ্রাচ্যের সংকটকে তীব্রতর করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নানা সময়ে নেতানিয়াহুর নীতির সমালোচনা করলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। যুক্তরাষ্ট্র তার প্রধান মিত্র। মার্কিন প্রশাসন নেতানিয়াহুকে বারবার সমর্থন দিয়ে এসেছে। অবশ্য ইউরোপের দেশগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। বসতি সম্প্রসারণ, ফিলিস্তিনি ভূমি দখল এবং গাজা অবরোধের বিষয়ে আন্তর্জাতিক চাপ থাকলেও নেতানিয়াহু কখনো নতি স্বীকার করেননি। একগুঁয়ে, আত্মবিশ্বাসী নেতার মতো এগিয়ে গেছেন। তার নীতির কারণে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আজ অনেক দূরের স্বপ্ন।

বিস্মৃতির অতলে ডুবে যাওয়ার আগে ইতিহাস আমাদের শেখায়—কিছু মানুষ শুধু সময়কে বদলায় না, ভবিষ্যতকেও প্রভাবিত করে। নেতানিয়াহু হয়তো তার ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন বা হারাবেন। কিন্তু তার সময়ে মধ্যপ্রাচ্য অস্থিরতার যে এক বিষম খেলা দেখেছে, তা ইতিহাস কখনো ভুলবে না। অস্থিরতার স্থপতি, নির্মমতার স্থপতি, জাতিগত নিধনযজ্ঞের স্থপতি হিসেবে তার নাম ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে। এই নাম কীভাবে স্মরণ করবে মানুষ? একজন জঘন্য কূটনীতিক, না কি এক অস্থির সময়ের নির্মম নির্মাতা? মধ্যপ্রাচ্যের মাটি রক্তাক্ত। শিশুর কান্না, মায়ের আর্তনাদ আর গাজার আকাশে ঘুরে বেড়ানো বারুদের গন্ধ আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, শান্তির জন্য আরও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। নেতানিয়াহুর নীতির ফল ভোগ করছে ফিলিস্তিনি জনগণ। হয়তো একদিন সূর্য উঠবে, শান্তির আলোয় ভরে যাবে মধ্যপ্রাচ্যের মাটি। তবে তার জন্য প্রয়োজন মানবিকতার জয়, রাজনীতির অমানবিকতার পরাজয়। নেতানিয়াহুর সামনে ছিল ইতিহাস গড়ার সুযোগ। শান্তির সোপান বেয়ে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। কিন্তু তিনি বেছে নিলেন সংঘাতের পথ। রাজনীতির চাতুর্যে তিনি প্রজ্ঞার আলোকে উপেক্ষা করলেন। সৌদি আরব, আরব বিশ্ব, এমনকি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যখন শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবি জোরালো হচ্ছিল, তখন নেতানিয়াহু অদ্ভুত এক আগ্রাসী নীতির দিকে ঝুঁকলেন। তবে ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। সময়ের পাঁকে জড়িয়ে থাকা ভুলগুলো ঠিকই জেগে ওঠে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুই তার স্পষ্ট প্রমাণ। একসময়ের সফল কূটনীতিককে আজ নিজ দেশেই বহিরাগতদের মতো দেখানো হচ্ছে। কূটনৈতিক দিগন্ত থেকে ক্রমেই ছিটকে পড়ছেন তিনি। সৌদি আরব থেকে শুরু করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এক সুরে বলে চলেছে—দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান ছাড়া আর কোনো পথ নেই।

নেতানিয়াহু শুনলেন না। বরং নিজেকে এমন এক উচ্চমঞ্চে দাঁড় করালেন, যেখান থেকে নিচে পড়ে যাওয়াই শুধু অবশ্যম্ভাবী। ৭৫ বছর ধরে ইসরায়েল নিজেকে আত্মরক্ষার অবতার হিসেবে উপস্থাপন করেছে। কিন্তু নেতানিয়াহু সেই ভাবমূর্তিকে নিজের হাতে ধ্বংস করে ফেলছেন। সৌদি আরবের ভূমিকা এই নতুন প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজা যেন এক রক্তাক্ত ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির সাক্ষী। সেখানে নিষ্পাপ শিশুরা প্রতিদিন বোমার আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে। অথচ এই মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেও নেতানিয়াহু এক ইঞ্চি পিছু হটলেন না। তিনি বরং ঘোষণা দিলেন, ফিলিস্তিনি বলে কোনো জাতি নেই। তাদের নিজ ভূমিতে থাকার অধিকার নেই। ইসরায়েলি সরকার এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে আন্তর্জাতিক আইনের চোখে নিজেদের আরও একঘরে করেছে। আজকের বিশ্ব আর ১৯৬৭ সালের মতো নেই। এখানে মানবাধিকার এবং স্বাধীনতার প্রশ্নে কেউ চুপ থাকে না। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাংশও এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব। নেতানিয়াহুর মন্তব্য যে কতটা বিপজ্জনক, তা বুঝতে খুব বেশি রাজনৈতিক বিশ্লেষক হওয়ার প্রয়োজন নেই। সৌদি আরবের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করে নেতানিয়াহু মুলত তিনি নিজের পায়েই কুড়াল মারলেন। মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক অঙ্গনে কূটনৈতিকভাবে প্রভাবশালী রাষ্ট্র সৌদি আরব। সেই দেশকে ক্ষুব্ধ করা কি বুদ্ধিমানের কাজ? মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সৌদি আরব ও ইসরায়েল হাত মেলাতে পারত। এমনকি শান্তির একটি নতুন অধ্যায় রচনা করা যেত। নেতানিয়াহু সেই সম্ভাবনাকে হত্যা করলেন। ফিলিস্তিন ইস্যু শুধু আরব বিশ্বের নয় বরং বিশ্বের প্রতিটি ন্যায়পরায়ণ মানুষের হৃদয়ের প্রশ্ন। এই সহজ প্রশ্নের উত্তর নেতানিয়াহু জটিল করে রেখেছে। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একাধিকবার বলেছেন, দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই একমাত্র পথ। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক একই কথা বলেছেন। ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা—সবাই আজ এই এক বিষয়ে একমত। অথচ নেতানিয়াহু নিজেকে ইতিহাসের বিপরীতে দাঁড় করালেন। গাজা আজ এক বন্দিশিবির। সেখানে জল নেই, বিদ্যুৎ নেই। শিশুরা ক্ষুধার্ত। মায়েরা অসহায়। দৃষ্টিজুড়ে ধ্বংসস্তূপ। অথচ সেই মানুষেরাই একদিন এই ভূমির গর্ব ছিল। তারা সেখানে জন্মেছে। তাদের পূর্বপুরুষরা সেই মাটিতে ঘুমিয়ে আছেন। এই ভূমি তাদের শেকড়। একজন রাজনীতিকের কাজ হলো সেই শেকড়ের গল্প শোনা। কিন্তু নেতানিয়াহু তা করলেন না। তিনি শুধু দেখালেন শক্তির দম্ভ। আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক থমাস ফ্রিডম্যান একবার বলেছিলেন, নেতানিয়াহুর সামনে দুটি পথ ছিল। একটি শান্তির পথ, আরেকটি যুদ্ধের। তিনি যুদ্ধের পথ বেছে নিয়েছেন। কিন্তু যুদ্ধের পথ সব সময়ই ভ্রান্তির পথ। আজকের বিশ্ব অনেক বদলে গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যুগে সত্য আর মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য করতে মানুষ খুব বেশি সময় নেয় না। গাজার প্রতিটি চিত্র, প্রতিটি আর্তনাদ এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। সেখানে শিশুদের রক্তাক্ত ছবি বিশ্বকে নাড়া দিচ্ছে। তাহলে নেতানিয়াহু কীভাবে মনে করলেন যে, তিনি এইসব আড়াল করতে পারবেন? কীভাবে ভেবেছিলেন যে, ইতিহাস তার বিচার করবে না? ফিলিস্তিনের মানুষ কখনো হার মানেনি। তারা কখনো নিজেদের ভূমি ছেড়ে চলে যায়নি। কয়েক দশক ধরে তারা কষ্ট করেছে। ত্যাগ স্বীকার করেছে। কিন্তু তারা তাদের অধিকার থেকে একচুলও পিছু হটেনি।

সৌদি আরব তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ আজ তাদের পাশে। এমনকি মার্কিন কংগ্রেসেও অনেক নেতা এখন গাজার জন্য ন্যায়বিচার দাবি করছেন। নেতানিয়াহু এই সংকটকে নিজের পক্ষে টানতে পারতেন। তিনি চাইলে নিজেকে শান্তি প্রতিষ্ঠার নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে নিজেকে অন্ধকার গলির ফেরিওয়ালা বানালেন। তার নিজের দেশে এখন তাকে ঘিরে বিক্ষোভ চলছে। ইসরায়েলিরা আজ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছে। তারা চায় না তাদের দেশ যুদ্ধের প্রতীক হিসেবে ইতিহাসে লিপিবদ্ধ থাকুক। তারা শান্তি চায়। কিন্তু শান্তির সেই বার্তা নেতানিয়াহুর কানে পৌঁছায় না। তার মন ভরে আছে ক্ষমতার মোহে। অতীতের অনেক শাসকের মতো তিনিও ভুলে গেছেন যে, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। সময় আসে, সময় চলে যায়। কিন্তু মানবতার প্রশ্নে যারা ভুল করে, তাদের ভুল চিরস্থায়ী হয়ে থাকে। ফিলিস্তিনের শিশুদের চোখে আজও স্বপ্ন আছে। সেই স্বপ্ন একদিন সত্যি হবে। মানবতা একদিন জয়ী হবে। আর তখন নেতানিয়াহু শুধুই এক দুঃস্বপ্নের নাম হয়ে থাকবে।


লেখক : শিক্ষক, গবেষক ও সংগঠক।

ডেল্টা টাইমস্/খন্দকার আপন হোসাইন/সিআর/এমই

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
  এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ  
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।

ফোন: ০২-৪৭১২০৮৬০, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।
ফোন: ০২-৪৭১২০৮৬০, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com