বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমুহের স্টুডেন্ট'স কাউন্সিল নিয়ে ভাবনা
মো. মুহতাসিম ফুয়াদ:
|
![]() বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমুহের স্টুডেন্ট'স কাউন্সিল নিয়ে ভাবনা প্রশ্ন হলো এত কষ্ট করেই যখন পড়ালেখা করবে তারা, তাহলে প্রদত্ত টিউশন ফি'র সর্বোচ্চ বেনিফিটস কেনো আদায় করা হবেনা? ক্যাম্পাস গুলা কেনো শিক্ষার্থী বান্ধব হবেনা? তাদের বাপের টাকায় চলা প্রসাশনের অনিয়ম নিয়ে কথা বললে কেনো ছাত্রত্ব হুমকিতে থাকবে! সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনক্যুয়েরি করলে এমন অজস্র প্রশ্ন উত্থিত হবে, যেগুলার জবাব আদায় করা জরুরি। আরেকটি সমস্যা হলো চাপা ছাত্র রাজনীতি! আমার জানা মতে, ছাত্রদলের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা পরিচালিত হয় সরাসরি বিএনপি'র হাই-কমান্ড থেকে। ছাত্রশিবিরের প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি শাখা কাজ করে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে। ছাত্রলীগও ফ্যাসিস্ট আমলে বেশ কয়েকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ সত্ত্বেও কমিটি দেওয়ার ঐদ্ধত্বতা দেখিয়েছিল! ছাত্র ইউনিয়ন পর্যন্ত নানান মোড়কে ইনটেলেকচুয়াল এক্টিভিটিস চালিয়ে ক্যাম্পাস গুলাতে আধিপত্য রাখার চেষ্টা করে থাকে। কিন্তু যেখানে আমার ভাইয়েরা নিজের/বাবার শ্রমের টাকায় পড়াশোনা করে, তাদের কাছে প্রচলিত আধিপত্যের ছাত্র রাজনীতি গ্রহণযোগ্য নয়। তারা কোনো সমস্যায় পড়ার পর অথোরিটির করুণা ভিক্ষা না পেলে, তাদের সমস্যা সমাধান করার কেও থাকেনা। কিন্তু, রাজনীতি করার কারণে বা, বড় ভাইয়ের লেজ ধরে কেউ একই সমস্যার সমাধান সহজে পেয়ে যাবে, এমন সিস্টেম সাধারণ শিক্ষার্থীরা পছন্দ করেনা। এই সকল সমস্যার সমাধান হলো স্টুডেন্ট'স কাউন্সিল প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি দলীয় লেজুড়বৃত্তি মুক্ত স্টুডেন্ট'স কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হয়, যেখানে প্রতিনিধি নিযুক্ত হবে শিক্ষার্থীদের ভোটে, তাহলে তাদের সমস্যা ও অধিকার নিয়ে কথা বলার লোকের অভাব পড়বে না। যে যত বেশি শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়ে কাজ করবে, তার তত বেশি সমর্থন থাকবে। কাউন্সিলে থাকবে না কোনো একক আধিপত্য, যে পদ পেয়ে গেলেই শিক্ষার্থীদের ভুলে যাওয়ার সুযোগ থাকবে। পরবর্তী মেয়াদে ভালো দায়িত্বে থাকতে চাইলে, আরো বেশি বেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। প্রতিটা ক্যাম্পাসে যখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভয়েজ প্রাধান্য পাবে, তখন লেজুড়বৃত্তিক প্রভাব বিস্তারের ছাত্র রাজনীতি অকার্যকর হয়ে পড়বে! স্টুডেন্ট'স কাউন্সিলের অন্তরায়: মালিক সমিতি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে সিন্ডিকেটের কাছে ধরাবাধা, সেটা হলো মালিক সমিতি। শিক্ষার্থী বান্ধব ক্যাম্পাস গড়তে গেলে সেখানে ১০০/১০০ বানিজ্য করা যায় না; ৬০/৪০ বা, ৫০/৫০ করতে হয়। তাই তাদের শিক্ষা বানিজ্যে ন্যূনতম ভাটা পড়বে, এমন সব সিদ্ধান্তে এই সিন্ডিকেট মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। আর সেখানে স্টুডেন্ট'স কাউন্সিলের মত একটি সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী তাদের অনিয়ম নিয়ে কথা বলার সুযোগ পাবে, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় করার জন্য চাপ সৃষ্টি করবে, মাত্রাতিরিক্ত টিউশন ফি নিয়ে প্রশ্ন তোলার স্কোপ পাবে, এগুলা তাদের চিন্তার উর্ধ্বে। মালিক সমিতির স্বৈরাচারীতার বৈধতা দেয় কারা? বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক অথোরিটির নিকটাত্মীয়, কাছের লোক বা, এলাকা কোটায় একটা গ্রুপ অব স্টুডেন্টস থাকে। এই স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থীকে প্রিভিলেজ দেওয়ার মাধ্যমেই তারা তাদের পক্ষের কিছু এক্টিভিস্টস পেয়ে যায়, যারা তাদের সকল অপকর্ম ট্যাকেল দিতে সহযোগিতা করে থাকে। এই দালাল গুলাই প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির সবথেকে বড় উপকরণ! এই যুগে অন্যের স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করার লোকের খুবই অভাব। ডাকসু এবং অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট কাউন্সিলের আলাপ উঠতেছে কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলা নিয়ে কারো কোন উচ্চবাচ্য নাই। তাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে নিজেদের অধিকার, নিজেদেরই আদায় করে নিতে হবে। '১৫, '১৮, '২৪ এর লিগ্যাসি বলে দেয় দাসত্ব্য আমাদের রক্তে নেই! লেখক : সংগঠক, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। ডেল্টা টাইমস/মো. মুহতাসিম ফুয়াদ/সিআর/এমই
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |