প্রকাশ: রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ৮:৫৬ পিএম

চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে গ্রেফতারের পর তার স্ত্রী তামান্না শারমিনের এক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে তিনি বলেন, “আমরা কাঁড়ি কাঁড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।”

শনিবার (১৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে ঘোরাঘুরি করার সময় তেজগাঁও থানা পুলিশ সাজ্জাদকে আটক করে। দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের তালিকাভুক্ত এই সন্ত্রাসীকে ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছিল।

এর আগে জানুয়ারিতে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন। কারণ, তিনি ফেসবুক লাইভে এসে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসিকে হুমকি দিয়েছিলেন।
সাজ্জাদ বলেছিলেন, ওসি আরিফ দেশের যে প্রান্তেই থাকেন না কেন, তাকে অক্সিজেনে ধরে এনে পেটানো হবে। প্রয়োজনে মরে যাব, কিন্তু হার মানব না।

সাজ্জাদকে গ্রেফতারের পর পুলিশ জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় অন্তত ১৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে খুন, অস্ত্র, মাদক, চাঁদাবাজিসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

সাজ্জাদের গ্রেফতারের পর তার স্ত্রী তামান্না শারমিন এক ভিডিও বার্তায় বলেন, আমার জামাই গতকাল রাতে গ্রেফতার হয়েছে, এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। মামলা যখন আছে, গ্রেফতার হবেই। আপনারা যারা ভাবছেন, আর কোনোদিন বের হবে না, তাদের জন্য এক বালতি সমবেদনা।

তিনি আরো বলেন, আমরা কাঁড়ি কাঁড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যেই আমার জামাই বের হয়ে আসবে।

এ ছাড়া, প্রতিপক্ষকে হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, এতদিন আমরা পলাতক ছিলাম, এখন তোমাদের পালানোর পালা শুরু। খেলা শুরু হবে এখন।

চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার সন্ত্রাসী ‘ছোট সাজ্জাদ’ ও ‘বুড়ির নাতি’ হিসেবে পরিচিত সাজ্জাদ দীর্ঘদিন ধরে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।

২০২৩ সালের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ অস্ত্রসহ সাজ্জাদকে গ্রেফতার করেছিল। তবে এক মাসের মাথায় জামিনে বেরিয়ে আসেন তিনি। এরপর ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের অক্সিজেন এলাকায় পুলিশ তাকে ধরতে গেলে তিনি গুলি ছুড়ে পালিয়ে যান। ওই ঘটনায় পাঁচজন আহত হয়েছিলেন, যাদের মধ্যে পুলিশ সদস্যও ছিলেন।

সর্বশেষ জানুয়ারিতে, ফেসবুক লাইভে এসে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসিকে বিবস্ত্র করে পেটানোর হুমকি দেন সাজ্জাদ।

তিনি বলেন, ওসি আরিফ চাঁদাবাজিসহ আমার সন্তান হত্যায় জড়িত, তাকে বদলি করা হোক। এই ঘটনার পর পুলিশ কমিশনার তার অবস্থান সংক্রান্ত তথ্যদাতাকে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া শাখা জানিয়েছে, সাজ্জাদকে গ্রেফতারের পর আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে। তাকে আদালতে হাজির করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলোর পুনঃমূল্যায়ন করা হবে।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সাজ্জাদকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডেল্টা টাইমস/সিআর