ফাহমিদুল ও আমাদের ফুটবল : বিশ্ব দেখবে বাংলাদেশ খেলবে
ওমর ফারুক:
|
![]() ফাহমিদুল ও আমাদের ফুটবল : বিশ্ব দেখবে বাংলাদেশ খেলবে বাংলাদেশে ফুটবল হয়তো ততটা উন্নত বা সমৃদ্ধ নয়, কিন্তু দেশের একটি বিশাল অংশ ফুটবল নিয়ে উৎসাহী। খেলা মানেই এক অদ্ভুত শান্তি ও বিনোদনের উৎস। আমরা ফিফা বিশ্বকাপ, ইউরো কাপ, কোপা আমেরিকা, ক্লাব বিশ্বকাপ এবং বিভিন্ন লিগের খেলায় উচ্ছ্বাসে মেতে উঠি। এটি মানুষের হৃদয়ে এক আলাদা উত্তেজনা জাগায়। ফুটবল ও অন্যান্য খেলা আমাদের অনৈতিক কাজ, অসৎ পথ এবং নেশার জগৎ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। স্পোর্টসের এমন প্রভাব রয়েছে যে, এটি মরণব্যাধি বা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতিও থামিয়ে দিতে পারে। আমাদের সবুজ-আঁকাবাঁকা মানচিত্রের দেশ ক্রিকেটে বেশ এগিয়ে। ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আমরা বাঙালিরা বিশ্বে নিজেদের জাতীয় পরিচয় তুলে ধরেছিলাম। পঞ্চ পাণ্ডবের সঙ্গে মোস্তাফিজ ও তাসকিনের মতো নতুন তারকারা এশিয়া ও বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের প্রতিভা মেলে ধরেছিলেন। আমরা প্রায় ক্রিকেটের পরাশক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছিলাম। তবে শেষের দিকে রাজনৈতিক প্রভাব এবং সাকিব-তামিমের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে আমরা কিছুটা পিছিয়ে পড়েছি। তাদের বন্ধুত্ব ভাঙার পর জাতীয় দল যেন ছন্নছাড়া হয়ে গেছে। তবুও আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াবো, এ বিশ্বাস আমাদের আছে। বর্তমানে আমরা ফুটবল নিয়ে স্বপ্ন দেখছি। দেশের ফুটবল এগিয়ে যাক, এটাই সব স্তরের মানুষের আশা ও আকাঙ্ক্ষা। ফুটবলপ্রেমী হিসেবে আমরা বিশ্ব মঞ্চে নেতৃত্বের স্বপ্ন লালন করি। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণের কাছাকাছি এসেও বাফুফে-তে ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে আশার আলো হিসেবে জাতীয় দলে ইংলিশ ফুটবলার হামজা নেওয়াজ চৌধুরীসহ দেশীয় বংশোদ্ভূত বহু ফুটবলার যোগ দিয়েছেন, যারা বিভিন্ন দেশে খেলছিলেন। এর আগে জামাল ভূঁইয়া এসে আমাদের আশা জাগিয়েছিলেন, এখন হামজারা এগিয়ে আসছেন। বিশেষভাবে নজর কাড়ছে ফাহমিদুল ইসলাম। তাকে নিয়ে উৎসাহ ও উচ্ছ্বাসের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তিনি এসেছিলেন, কিন্তু আবার চলে গেছেন। আপনারা কি জানেন, দেশে ফাহমিদুলের জন্য আন্দোলন চলছে? গত কয়েক দিনে তাকে নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের মাঠে এবং টার্ফে খেলার সময় ফাহমিদুলের নামে প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে। আমরা তাকে ফিরিয়ে চাই। আমাদের লালিত স্বপ্ন ভেঙে দেবেন না। আমরা জাতীয় ফুটবল দলকে বিশ্বকাপে দেখতে চাই। "বাংলাদেশ! বাংলাদেশ!" বলে গ্যালারিতে গলা ফাটাতে চাই। আমরা কোনো ভুল বোঝাবুঝি বা সমস্যা চাই না। আমাদের ফুটবল দল আগের মতো নেই, এখন স্বপ্ন সত্যি হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। আমরা বিশ্বের স্টেডিয়ামে রাত-বিরাতে লাল-সবুজ জার্সিতে দেশকে দেখতে ও বিশ্বকে দেখাতে চাই। হ্যাঁ! আমরাও পারি! আমরা এখন অনেক শক্তিশালী। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের নিশান উড়বে। ব্যালন ডি’অরে বাংলাদেশি খেলোয়াড় প্রতিযোগিতা করবে। বিশ্ব মিডিয়ায় আমাদের নিয়ে হইচই হবে, এবং কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন সত্যি হবে। আমরা ফাহমিদুল ইসলামকে জাতীয় দলে দেখতে চাই। আমরা ফাহমিদুলসহ বিদেশে খেলা বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের লাল-সবুজ জার্সিতে দেখতে চাই। দীর্ঘদিন আমরা অন্য দেশের পতাকা নিয়ে উৎসাহে মেতেছিলাম। এখন সময় এসেছে আমাদের লাল-সবুজ পতাকা উড়ানোর। হামজা, মুরসালিন, ফাহমিদুল, জামালসহ সবাই দেশের জন্য খেলে দেশকে এগিয়ে নেবে। তারা আমাদের জাতীয় পরিচয় তুলে ধরবে, যেমনটা সাকিব, তামিম, মাশরাফি, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, তাসকিন ও মোস্তাফিজ ক্রিকেটে করেছেন। হ্যাঁ! বাংলাদেশ খেলবে, বাঙালি দেখবে, বিশ্ব দেখবে। বাংলাদেশ হবে বিশ্বমানের দল। মেসি, রোনালদো, নেইমার, সালাহ, বেনজেমা, দি মারিয়া, বেল, এমবাপে, মুলার ও কেইনের মতো বিশ্ব ফুটবলার আমাদের দেশ থেকে উঠবে, ফুটবে, খেলবে এবং মাঠ কাঁপাবে। সেই দিন বেশি দূরে নয়, যেদিন বাংলাদেশ বিশ্বকাপে খেলবে এবং একদিন চ্যাম্পিয়ন হবে। আমাদের সোনার ছেলেরা, সূর্য সন্তানেরা, বার্সা, রিয়াল, লিভারপুল, মিলান, নাপোলি, পিএসজি ও বায়ার্নের মতো নামি ক্লাবে খেলবে। ফাহমিদুলকে ফিরিয়ে আনুন, তাকে স্বদেশের জার্সিতে দেখতে চাই। বাংলাদেশ! বাংলাদেশ! বাংলাদেশ! লেখক : ইংরেজি বিভাগ, সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম। ডেল্টা টাইমস/ওমর ফারুক/সিআর/এমই |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |