নিয়ন্ত্রণহীন অটোরিকশা আশীর্বাদ থেকে অভিশাপ
হৃদয় বড়ুয়া:
|
![]() নিয়ন্ত্রণহীন অটোরিকশা আশীর্বাদ থেকে অভিশাপ গত এক দশকে এর সংখ্যা বেড়েছে হু-হু করে। আজকের দিনে এসে এর সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে, কিন্তু আইনগত কাঠামো এখনো রয়ে গেছে যাত্রার শুরু মতোই দুর্বল ও দিশেহারা। বর্তমানে অটোরিকশা শহরের সর্বত্র এক প্রকার দাপটের সাথে বিচরণ করছে। সড়ক, মহাসড়ক, অলিগলি, প্রধান সড়ক কোথাও এর দখল নেই কমতি। আর সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, এই পেশায় প্রবেশের জন্য নেই কোনো উপযুক্ত মানদন্ড, নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স, নেই ট্রাফিক নিয়মের জ্ঞান-অপ্রশিক্ষিত, নেই অভিজ্ঞতার সনদ, এমনকি নেই কোনো কার্যকর সরকারি নীতিমালার বাধ্যবাধকতা। তামধ্যে সড়কে যানজট ও দুর্ঘটনার হার দিনকে দিন বেড়ে চলছে। প্রতিদিন কোনো না কোনোভাবে দূর্ঘটনা ঘটিয়ে চলছে। আর এটি যেন এক 'অন্ধ পেশা' যেখানে অন্ধভাবে প্রবেশ করা যায়, কিন্তু সমাজকে অন্ধ করে তোলার দায় কেউ নেয় না। একটি নগর কি এভাবে চলতে পারে? যেখানে প্রতিদিন হাজারো অটোরিকশা ট্রাফিক ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে তোলে, পথচারীদের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং শহরের গতি ও শৃঙ্খলা দুইটাই গ্রাস করে ফেলে? এমতাবস্থায় ক্ষমার নীতিতে নয়, সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জেগে ওঠা অত্যন্ত জরুরি। আইন প্রয়োগে শিথিলতা আর কঠোরতা ও সুশৃঙ্খল নীতিমালায় নিয়ন্ত্রণ আনতে না পারলে এটি জাতির জন্য অভিশাপে পরিণত হবে। তবে "সরকারের উচিত অটোরিকশা পুরোপুরি বন্ধের মতো কঠোর সিদ্ধান্তে না গিয়ে এর বিকল্প ব্যবস্থার দিকে মনোযোগ দেওয়া। যেমন; নিয়মিতকরণ, রেজিষ্ট্রেশন, চালকদের প্রশিক্ষণ, ই-রিকশার মতো পরিবেশবান্ধব ও আধুনিক যানবাহনে রূপান্তরের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে এগোনো যেতে পারে। কারণ, একটি পেশা বন্ধ করে দিলে তা শুধু যানবাহন নয়, হাজারো পরিবারের জীবন থমকে যায়।" অন্যদিকে সরকার এই যান গুলো নিয়ন্ত্রন করতে পারলে প্রতিবছর এইখাত থেকে হাজার-হাজার কোটি টাকা রাজস্বও আদায় করতে পারবে। সরকারের উচিত দ্রুত সময়ের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া। অটোরিকশা যেমন এক সময় ছিল জীবিকার প্রতীক, আজ যেন তা হয়ে না ওঠে জাতির দুর্ভোগের অনিবার্য উৎস। নইলে ভবিষ্যতের বাংলাদেশে এই নিয়ন্ত্রণহীন যানই হয়ে উঠবে এক অভিশপ্ত অধ্যায়। লেখক : কলামিস্ট, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী। ডেল্টা টাইমস/হৃদয় বড়ুয়া/সিআর/এমই |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |