বিমানবন্দরে হয়রানির শিকার ভারতীয়দের জরিমানা পরিশোধের প্রস্তাব ব্যবসায়ীর
ডেল্টা টাইমস ডেস্ক:
|
![]() বিমানবন্দরে হয়রানির শিকার ভারতীয়দের জরিমানা পরিশোধের প্রস্তাব ব্যবসায়ীর মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১২ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জয়পুর বিমানবন্দরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরে সেই ব্যবসায়ী জয়পুর বিমানবন্দরে হয়রানির শিকার ভারতীয়দের জরিমানা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে যাদের জিনিসপত্র জব্দ করা হয়েছে, সেগুলো আবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) আনতে তাদের জরিমানার টাকা তিনি পরিশোধ করবেন। বাসু শ্রফ ১০ বছর পুরনো রোলেক্স ঘড়ির জন্য যে হয়রানির শিকার হন, সেই ঘটনার ধাক্কা তিনি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি, আর তাই তিনি তার ভারতীয় সহযাত্রীদের জন্য কিছু করতে চাচ্ছেন। তিনি খালিজ টাইমসকে বলেন, ‘অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ ওই বিমানবন্দর ব্যবহার করেন এবং কর্মকর্তাদের হয়রানির শিকার হন। আমি কিছু নারীকেও দেখেছি, যাদের মঙ্গলসূত্র (হিন্দু বিবাহিত নারীদের পরিহিত একটি পবিত্র হার) খুলে নিতে বাধ্য করা হয়েছে। ’ তিনি আরো বলেন, ‘যেসব যাত্রীর জিনিসপত্র জব্দ হয়েছে এবং যারা সেগুলো দুবাইতে ফিরিয়ে আনতে চান, তাদের জন্য আমি জরিমানার টাকা পরিশোধ করে দিতে প্রস্তুত।’ এই উদ্যোক্তা গত ১২ এপ্রিল ভারতে দুই দিনের সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে কাস্টমস কর্মকর্তারা তাকে থামিয়ে দেন এবং ১ লাখ ৫০ হাজার দিরহাম মূল্যের সোনার ঘড়ির জন্য কাস্টমস শুল্ক পরিশোধ করতে বলেন। শ্রফ জানান, তাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করানো হয় এবং এই সময় তার সঙ্গে ‘অপরাধীর’ মতো ব্যবহার করা হয়। গতকাল রবিবার জানা গেছে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজন কাস্টমস কর্মকর্তাকে রাজস্থানের বিভিন্ন জায়গায় বদলি করা হয়েছে। শ্রফ গত ৭৩ বছর ধরে দুবাইতে বসবাস করছেন। দুই দিনের সফরে তিনি রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজন লাল শর্মাসহ কয়েকজন ভিআইপির সঙ্গে দেখা করতে এবং একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে জয়পুর গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এই ঘটনার পর তারা নিজেদের পরিবর্তন করবেন।’ যদিও কর্মকর্তারা শাস্তি পাওয়ায় শ্রীফ খুশি, তবে তার আইনজীবী ধর্মেন্দ্র সিং খালিজ টাইমসকে নিশ্চিত করেছেন, তিনি এই ঘটনায় একটি জনস্বার্থ মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসা দরকার। ব্যক্তিগত গয়না নিয়ে মানুষকে হয়রানি করা উচিত নয়। আমার মক্কেল তার ঘড়ি পরে ছিলেন এবং তিনি হাফ হাতা জামা পরেছিলেন। ফলে ব্যক্তিগত জিনিসপত্র যাত্রার সময় দৃশ্যমান ছিল, কর্মকর্তাদের বোঝা উচিত ছিল, সেগুলো লুকানো ছিল না।’ ভারতের কাস্টমস নিয়ম অনুযায়ী, বিলাসবহুল সামগ্রী যথাযথ ঘোষণা ছাড়া দেশে আনা হলে প্রায় ৩৮ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। তবে অনেক প্রবাসী অভিযোগ করেন, বিমানবন্দরে কর্মকর্তারা তাদের হয়রানি করেন। এই মাসের শুরুতে দিল্লি হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন, যাত্রীরা পরিহিত ব্যক্তিগত বা উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া গয়না কাস্টমস কর্মকর্তারা জব্দ বা আটকে রাখতে পারবেন না এবং যাত্রীদের হয়রানি করা যাবে না। সিং আরো বলেন, ব্যবস্থার পরিবর্তন এখন খুবই জরুরি। কারণ রাজস্থান একটি পর্যটনকেন্দ্র। জয়পুরে অনেকে তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান করে। অনেক নারী তাদের গয়না ও অলংকার নিয়ে আসেন এসব অনুষ্ঠানের জন্য। যদি তারা এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হন, তবে কেউ আর জয়পুরে আসতে চাইবে না। তাই এমন একটি ব্যবস্থা থাকা উচিত যাতে এ ধরনের যাত্রীদের নির্বিঘ্নে যাতায়াত নিশ্চিত করা যায়।’ ডেল্টা টাইমস/সিআর
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |