নারী কোটা সরিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন সমীকরণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
|
![]() . বৃহস্পতিবার (২২ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়, যেখানে নারী কোটা বাতিলের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মহিলা কোটা রাখার প্রয়োজন নেই এবং এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এর আগে, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এই বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মতামত চেয়ে একটি চিঠি পাঠায়। পরে মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী এনটিআরসিএর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগে মোট ৭ শতাংশ কোটা রাখার পক্ষে মত প্রদান করেন। এই নির্দেশনায় মহিলাদের জন্য আলাদা কোনো কোটা না রাখার সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত ছিল। বর্তমানে সরকারি চাকরিতে মোট ৭ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত রয়েছে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ কোটা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য, ১ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য এবং ১ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে। নতুন এই নীতিমালার আলোকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও শিক্ষক নিয়োগে একই ধরনের কোটা ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে বেসরকারি স্কুল ও কলেজে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোটা ভিত্তিক নারী পদ সংরক্ষণের প্রথা বন্ধ হবে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ নীতিমালা ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী নারীদের অংশগ্রহণ ও সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেয়া হবে। এই সিদ্ধান্ত শিক্ষাক্ষেত্রে কোটা নীতির পুনর্মূল্যায়নের অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। সরকারি চাকরি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কোটা ব্যবস্থাপনায় সামঞ্জস্য রেখে নারী কোটা বাতিল হলেও, সামগ্রিক কর্মসংস্থান নীতিমালায় নারী শিক্ষকের অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য অন্যান্য উদ্যোগ গ্রহণের কথা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী, সব ধরনের কোটা বাতিল করে শুধু ৭ শতাংশ কোটা বহাল রাখা হয়েছে। সেই ৭ শতাংশ কোটার আওতায় এনটিআরসিএর মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১৯৯৯ সালে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে ৩০ শতাংশ নারী কোটা চালু করা হয়। তবে পূর্ণমাত্রায় বাস্তবায়িত না হওয়ায় বিশ্বব্যাংকের সুপারিশে ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার এটি বাধ্যতামূলক করে। পরে অনগ্রসর অঞ্চলে নারী প্রার্থীর স্বল্পতা দেখা দিলে ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গোপালগঞ্জসহ কিছু জেলা ও উপজেলায় নারী কোটা শিথিল করে। এদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনার আলোকে সরকার নবম থেকে ২০তম গ্রেড পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে ৭ শতাংশ কোটা রেখে বাকি পদে মেধাভিত্তিক নিয়োগের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করে। বর্তমানে ৭ শতাংশ কোটার মধ্যে রয়েছে– বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ। ডেল্টা টাইমস/সিআর
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |