|
দেশে অ্যানথ্রাক্সের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে: সচেতন থাকুন
এস. এম. এম. মুসাব্বির উদ্দিন
|
![]() দেশে অ্যানথ্রাক্সের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে: সচেতন থাকুন অ্যানথ্রাক্স কী? অ্যানথ্রাক্স একটি সংক্রামক রোগ, যা Bacillus anthracis নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়। সাধারণত এটি গবাদিপশু ও বন্য প্রাণীতে দেখা যায়, তবে মানুষের মধ্যেও সংক্রমণ ঘটতে পারে। প্রাচীনকাল থেকেই অ্যানথ্রাক্স মানুষের কাছে পরিচিত ছিল। কৃষিভিত্তিক সমাজে এর প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। কখনো কখনো এই রোগকে “Splenic fever” নামেও ডাকা হয়। রোগের বিস্তার ও সংক্রমণ অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু খুবই শক্তিশালী। এর স্পোর মাটিতে অনেক বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। সংক্রমণ সাধারণত হয়: আক্রান্ত পশুর সরাসরি সংস্পর্শে আসলে আক্রান্ত পশুর মাংস, চামড়া বা লোম স্পর্শ করলে দূষিত বাতাস বা খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে যারা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, পশুপালন এলাকা বা কসাইখানায় কাজ করেন, তারা ঝুঁকিতে থাকেন। অ্যানথ্রাক্সের ধরন মানুষের মধ্যে অ্যানথ্রাক্স মূলত তিন ধরনের হয়: ত্বকজনিত অ্যানথ্রাক্স (Cutaneous anthrax): সবচেয়ে সাধারণ। ত্বকে ক্ষত ও কালো দাগ দেখা দেয়। শ্বাসতন্ত্রজনিত অ্যানথ্রাক্স (Inhalation anthrax): দূষিত স্পোর শ্বাসনালীতে প্রবেশ করলে হয়। সবচেয়ে গুরুতর এবং জীবনঘাতী হতে পারে। আন্ত্রিক অ্যানথ্রাক্স (Gastrointestinal anthrax): দূষিত মাংস খাওয়ার ফলে হয়। বমি, ডায়রিয়া ও রক্তক্ষরণসহ মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেয়। লক্ষণ ত্বকজনিত: চুলকানি, ফোসকা এবং পরে কালো ক্ষত। শ্বাসতন্ত্রজনিত: জ্বর, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুসে প্রদাহ। আন্ত্রিক: তীব্র পেটব্যথা, বমি, রক্তমিশ্রিত ডায়রিয়া। চিকিৎসা ও প্রতিরোধ চিকিৎসা: অ্যানথ্রাক্স চিকিৎসাযোগ্য। সময়মতো এন্টিবায়োটিক (যেমন: সিপ্রোফ্লক্সাসিন, ডক্সিসাইক্লিন) সেবন করলে সুস্থ হওয়া সম্ভব। তবে দেরিতে চিকিৎসা করলে রোগ মারাত্মক হতে পারে। প্রতিরোধ: আক্রান্ত পশুর মৃতদেহ মাটিতে চাপা দিয়ে জীবাণু ছড়ানো রোধ করুন। পশুদের নিয়মিত ভ্যাকসিন দিন। ঝুঁকিপূর্ণ পেশার মানুষদের জন্য বিশেষ ভ্যাকসিন রয়েছে। ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য দস্তানা, মাস্ক ও হাত ধোয়া অপরিহার্য। অ্যানথ্রাক্স একটি প্রাচীন ও মারাত্মক সংক্রমণ হলেও, সচেতনতা, পশুর স্বাস্থ্যসেবা এবং আধুনিক চিকিৎসা ব্যবহার করে এটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য। ব্যক্তিগত সতর্কতা ও সামাজিক উদ্যোগ মিলিয়ে আমরা এ রোগ প্রতিরোধে সফল হতে পারি। লেখক: শিক্ষার্থী,ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ। ডেল্টা টাইমস্/এস. এম. এম. মুসাব্বির উদ্দিন/আইইউ |
| « পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |