|
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে
মেট্রোরেল স্টেশনটি “সচিবালয় নয়” : যৌক্তিক নাম “জাতীয় প্রেসক্লাব”
সৈয়দ সফি
|
![]() . তবে, এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন বোধ করছি। বিষয়টি স্টেশনের নাম নিয়ে। উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মোট স্টেশনের সংখ্যা ১৪ টি। একটি বাদে সবকয়টি স্টেশন স্থানের নামে নামকরণ করা হয়েছে। যেমন, উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর এগারো, মিরপুর দশ, কাজিপাড়া, শেওড়া পাড়া, আগারগাঁও ইত্যাদি। আর তোপখানা রোডস্থ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সম্মুখ ভাগ জুড়ে স্থাপিত মেট্রোরেল স্টেশনের নাম দেয়া হয়েছে "সচিবালয় স্টেশন"। সচিবালয়ের চারদিকেই রাস্তা। এরমধ্যে তোপখানার দিকে সচিবালয়ের কোন গেট নেই। সচিবালয়ে যাতায়াতের জন্য প্রায় সবকয়টি গেট প্রেস ক্লাবের পেছন বা দক্ষিন দিকে ৫-৭ শ' গজ দূরে আবদুল গণি রোডে। তাই সঙ্গত কারণে প্রশ্ন জাগে মেট্রোরেল স্টেশনের নাম "সচিবালয়" রাখা হলো কেন! কেন, "জাতীয় প্রেসক্লাব" নয়? এই প্রশ্ন করার পেছনে নিশ্চয় কারণ আছে। আর সেই কারণটি হচ্ছে, দেশের রাজধানীতে রিকশা থেকে শুরু করে সব ধরনের গণপরিবহনের স্টপেজ হিসেবে "প্রেসক্লাব" অতি পরিচিত একটি নাম। এমন কোন শ্রেনী পেশা'র মানুষ নেই, যিনি প্রেস ক্লাব চেনেন না। যুগ যুগ ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তাটি সবধরনের পরিবহনের কাছে স্টপেজ হিসেবে 'প্রেসক্লাব' নামটি প্রতিষ্ঠিত। মনে রাখা দরকার জাতীয় প্রেস ক্লাব কেবলই একটি ভবন নয়, একটি সাধারণ প্রতিষ্ঠান নয়। জাতীয় প্রেস ক্লাবের যেমন রয়েছে ইতিহাস-ঐতিহ্য, তেমনি রয়েছে ভাষা আন্দোলন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে নানামুখী ভূমিকা। এসব আন্দোলনে অংশগ্রহণকারি জাতীয় প্রেস ক্লাবের অনেক সদস্য ও সাংবাদিককে দিতে হয়েছে, বুকের তাজা রক্ত। হারাতে হয়েছে আমাদের পূর্বসূরি অনেক সাংবাদিক ভাইকে। ফলে, নানা রকম চড়াই-উৎরাই এ-র মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে জাতীয় প্রেসক্লাব। জাতীয় প্রেস ক্লাবের ঐতিহ্যকে ধরে রাখা সবারই দায়িত্ব। অতএব, গণপরিবহনের স্টপেজ বা স্টেশন হিসেবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সম্মুখ ভাগের নাম পরিবর্তন করা মোটেই সমীচীন নয়। সব ধরনের যানবাহন বা সব শ্রেনীর মানুষ যেহেতু প্রেসক্লাব হিসেবে স্টপেজটির নাম জানে এবং চেনে তাই অবশ্যই মেট্রোরেল স্টেশনের নাম একবাক্যে "জাতীয় প্রেসক্লাব" হওয়া উচিত। কেননা, মেট্রোরেলের লাইন শিক্ষা ভবন থেকে টার্ন না নিয়ে যদি সোজাসুজি আবদুল গণি রোড হয়ে সচিবালয়ের সামনে দিয়ে যেতো এবং সচিবালয়ের সামনেই স্টেশন করা হতো সেই ক্ষেত্রে "জাতীয় প্রেসক্লাব" নামকরণের প্রশ্ন আসতো না। যেহেতু জাতীয় প্রেস ক্লাবের সম্মুখভাগের পুরো এলাকা জুড়ে স্টেশনটির অবস্থান সে কারণেই "সচিবালয়" নয়, স্টেশনের নাম "জাতীয় প্রেসক্লাব" হওয়াটা সবদিক বিবেচনায় যৌক্তিক। সচেতন সাংবাদিক সমাজ একবছর আগে থেকে স্টেশনটির নাম "জাতীয় প্রেসক্লাব" রাখবার দাবি জানিয়ে আসছেন। এমনকি জাতীয় প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ সহ সিনিয়র সাংবাদিকরা এ বিষয়ে সরকারের ওপর মহলের সাথে একাধিকবার কথা বলেন। সাংবাদিকদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়াও পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, এখন পর্যন্ত নাম পরিবর্তনের কোনো ঘোষণা আসেনি। সংশ্লিষ্ট বিভাগ তার আগের অবস্থানেই রয়েছে অনড়। তারা স্টেশনের নাম "সচিবালয়" বহাল রেখেছেন। এরইমধ্যে আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধনের জন্য ২০ অক্টোবর, ২০২৩ দিন ধার্য করা হয়েছে। আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন মানেই হচ্ছে, উত্তরা-মতিঝিল রুটটি পুরোপুরি চালু হওয়া। ফলে, পুরোপুরি চালু হয়ে গেলে সে সময় টেকনিক্যাল কারণে নাম পরিবর্তনে অনেক জটিলতা সৃষ্টি ও ব্যয় বহুল হবে। তাই, আগে ভাগে অর্থাৎ অবিলম্বে স্টেশনের নাম "জাতীয় প্রেসক্লাব" করার ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে সচেতন সাংবাদিক সমাজ মনে করে। লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক ডেল্টা টাইমস্/সৈয়দ সফি/সিআর/এমই
|
| « পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |