খুবির অনলাইন ক্লাস! কারও স্বস্তি, কারও ভোগান্তি
রুবায়েত হোসেন, খুবি
|
করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় ৭ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেকারণে শিক্ষাকার্যক্রম অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সংকট দূরীকরণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) অনলাইন পাঠদান চালু থাকলেও সেটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া কাজ করছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থীই এখন নেটওয়ার্কজনিত সমস্যার কারণে ঠিকভাবে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রায় সব ডিসিপ্লিনেই সর্বোচ্চ ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে পারে। বাকিরা ডিভাইসজনিত, নেটওয়ার্কজনিত সমস্যা, ইন্টারনেট খরচ বহনে হিমশিম সহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে ক্লাসে যুক্ত হতে পারছেন না। তবে অনেকেই অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে পড়াশোনায় এগিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হওয়ার সুবিধার্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনাসুদে শিক্ষাঋণের ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া দেশের দুইটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সাথে স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ দেবার প্রক্রিয়াটিও চলমান রয়েছে। নেটওয়ার্কজনিত সমস্যাই অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের জন্য বর্তমানে প্রধান বাধা হয়ে দাড়িয়েছে। ![]() খুবির অনলাইন ক্লাস! কারও স্বস্তি, কারও ভোগান্তি অমিত মজুমদার, তিনি কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি থাকেন পিরোজপুরের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে। যেকারণে সেখানে নেটওয়ার্কের অবস্থা খুবই খারাপ। ইচ্ছা থাকা সত্বেও সে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার এখানে একাধারে বিদ্যুৎ বিভ্রাট তার উপর নেটওয়ার্ক সমস্যা। সকাল ৬ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না। মাস তিনেক ধরে এ সমস্যা চলছে। তিনি দাবি করেছেন আমাদের শিক্ষকরা যদি প্রতিদিনের ক্লাসটা রেকর্ড করে আমাদেরকে দেয় তাহলে আমার মত যারা আছে তারা সবাই পরবর্তীতে সে ক্লাসটা করে নিতে পারবে। কিন্তু এটা খুবই দুঃখজনক যে এই জিনিসটি সব শিক্ষকই এড়িয়ে যাচ্ছেন। অনলাইন ক্লাস শুরু হওয়ার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেমন দুঃশ্চিন্তা কাজ করছে তেমনি কিছুটা স্বস্তিও এনে দিয়েছে তাদের মধ্যে। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মায়মুনা জামান আলভি বলেন, প্রথম দিকে তো পড়ালেখা থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছিলাম। আর মনের ভিতর সবসময়ই একটা ভয় ছিল যে এই বুঝি আমরা সেশনজটে পড়ে গেলাম। কিন্তু এখন আর সেই ভয়টা নেই। কিছুটা হলেও স্বস্তি কাজ করছে মনের ভিতর। আইইআর ডিসিপ্লিনের আরেক শিক্ষার্থী আল ইমরান বলেন, আগে ডিভাইস সমস্যা ছিল সেটা সমাধান হয়েছে কিন্তু এখন নেটওয়ার্কের সমস্যা। আমাদের ক্লাসে মোটামুটি সবাই নিয়মিত ক্লাসে করে আমার একারই শুধু সমস্যা। এজন্য আমার কিছুটা চিন্তাও হয় যে অন্যদের ছাড়া তো আমি অনেকটা পিছিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষকরা যদি এসাইনমেন্ট, এ্যাটেনডেন্স এগুলোর ক্ষেত্রে আমার বিষয়টা বিবেচনা করেন তাহলে ভাল হবে। শিক্ষার্থীদের সমস্যা দূরীকরণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) প্রশাসন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মোঃ শরীফ হাসান লিমন বলেন, এই প্যানডামিক পরিস্থিতির জন্য তো আমরা কেউই প্রস্তুত ছিলাম না। অনলাইন ক্লাস তো পুরোপুরিভাবে নেটওয়ার্কের সাথে সম্পর্কিত। আর আমাদের মত দেশে অনলাইনের মত ক্লাস থেকে যে একশ ভাগ সফলতা আসবে না এটাই স্বাভাবিক। কিন্ত আমরা সবসময়ই চেষ্টা করে যাচ্ছি শিক্ষার্থীরা যাতে যথাযথভাবে ক্লাস করতে পারে সে ব্যবস্থা করার। আর শিক্ষার্থীরা যারা নিয়মিত ক্লাস করতে পারছে না তারা যাতে পরবর্তীতে ক্লাস রেকর্ড দেখে সেটা করে নিতে পারে এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবশ্যই বিবেচনা করবে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্তে যেভাবে সম্ভব সেভাবেই তাদেরকে আমরা সহযোগীতা করবো। ডেল্টা টাইমস্/মোঃ রুবায়েত হোসেন/সিআর/জেড এইচ |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |