হাইওয়ের গাড়ির বাতাসের চাপে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করল ৩ তরুণ
ডেল্টা টাইমস্ ডেস্ক:
|
![]() হাইওয়ের গাড়ির বাতাসের চাপে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করল ৩ তরুণ তরুণদের উদ্ভাবিত উইন্ড টারবাইনগুলোতে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু আইওটি সেন্সর। যার সাহায্যে ওই মহাসড়কের তাপমাত্রা, বাতাসের আদ্রতা ও কার্বনডাইঅক্সাইডের পরিমান জানা যাবে। যা মহাসড়কের আশেপাশের মানুষদের অ্যাপের মাধ্যমে সরবরাহ করবে। হাইওয়ের বাতাসের চাপ থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার এই প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়েছেন রাহাত উদ্দিন। যিনি ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছেন। এখন প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটিতে ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেট্রোনিক্স ইঞ্জিনিইয়ারিংয়ে বিএসসি করছেন। রাহাত বলেন, দেশে জীবাশ্ম জ্বালানি নিঃশেষ হওয়ার পথে। এই সময়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের তাগিদ উঠেছে। যা জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ হ্রাস করার অন্যতম উপায়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি, কারণ এখানে কিছু সমস্যা বিদ্যমান। প্রথমত আমাদের দেশে যে টারবাইনগুলো ব্যবহার হচ্ছে এগুলো আকারে অনেক বড়। রক্ষণাবেক্ষণ খরচও অনেক বেশি। এই টারবাইনগুলোর জন্য অনেক বেশি পরিমানে বাতাসের চাপ প্রয়োজন। এতে করে দেশের ভেতর বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে পারিনি। এছাড়া এই টারবাইনগুলোর ব্লেড পাখির জন্য বিপদজনক। তাই এই সব কিছু বিবেচনা করে আমরা একটি টারবাইনের ডিজাইন করি, যা আমাদের হাইওয়ে এবং নৌপথে জাহাজ গুলোতে স্থাপন করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। প্রকল্পের অন্যতম সদস্য আব্দুল্লা আল আরাফ। যিনি ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে এখন সাউথ ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিইয়ারিং ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী। ![]() হাইওয়ের গাড়ির বাতাসের চাপে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করল ৩ তরুণ তিনি জানান, এই প্রকল্পের মূল উদ্দ্যেশ হচ্ছে দেশে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পদ্ধতিকে আরো সহজ করা। যাতে করে দেশে সোলারের পাশাপাশি বায়ু বিদ্যুৎ জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এই প্রকল্পের আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে- সেন্সরের মাধ্যমে বাতাসে কার্বনের পরিমান ও বায়ু দূষণের পরিমাণ সম্পর্কে মানুষকে জানানো। রাহাত বলেন, আমাদের এই প্রকল্পে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কোনো ধরনের জ্বালানির প্রয়োজন নেই। তাই পরিবেশবান্ধব। হাইওয়েতে পর্যাপ্ত বায়ুপ্রবাহ থাকায় বাতাসের চাপকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে আমাদের এনার্জি খাতের জন্য নতুন একটি মাত্রা যোগ করবে। এছাড়াও প্রতিদিন আমাদের নদী পথে শত শত লঞ্চ ও ট্রলার চলাচল করে, যেখানে প্রতিনিয়ত বাতাস প্রবাহিত হয়। আমাদের তৈরি এই টারবাইন নৌযানগুলোর ছাদে স্থাপন করলে প্রচুর পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের দাবি তাদের উদ্ভাবিত টারবাইন দিয়ে ১০০০ ওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। যেই বিদ্যুৎ দিয়ে ১০টি এলইডি লাইট জ্বালানো যাবে। বড় আকারে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিদ্যুতের স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা যাবে। প্রকল্পটির সঙ্গে যুক্ত আরেক উদ্ভাবক রেজাউল খান জানান, এশিয়ার অনেক দেশই দুষণমুক্ত জ্বালানি উৎসের খোঁজ করছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এবং থাইল্যান্ড অনেক এগিয়ে গেছে উপকূলীয় বায়ু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে । প্রতি বছরই তারা বাজেট বাড়াচ্ছে এই খাতে। ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা হিসাব করে দেখিয়েছেন, ৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি উইন্ড টারবাইন প্রতিবছর প্রায় ১১০০ টন জীবাশ্ম জ্বালানির খরচ বাঁচাতে পারে। কম খরচে হাইওয়ে ও নৌযানে উইন্ড টারবাইন উদ্ভাবনে দলটির মেন্টর হিসেবে ছিলেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিইয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ড. খন্দকার আব্দুল্লা আল মামুন। ডেল্টা টাইমস্/সিআর/এমই
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |