|
অসৎ, অতিরিক্ত লোভী এবং পরশ্রীকাতর, সমাজের জন্য অদৃশ্য ক্ষতির উৎস
রহমান মৃধা:
|
![]() অসৎ, অতিরিক্ত লোভী এবং পরশ্রীকাতর, সমাজের জন্য অদৃশ্য ক্ষতির উৎস জীবনে বহুবার মানবিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। অত্যন্ত নিকটজনদের জন্য শ্রম, সম্পদ, এবং সময় ব্যয় করেছি, যাতে তারা জীবনে সঠিক পথে এগিয়ে যেতে পারে। কিন্তু বহুবার সেই সাহায্যের প্রতিদানে পেয়েছি অকৃতজ্ঞতা, অসততা, এবং কৃত্রিম আচরণ। উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতা; • অনেককে উচ্চশিক্ষার জন্য সুযোগ করে দিয়েছি।• বিদেশে নিয়ে গিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করেছি। • থাকার ব্যবস্থা, আর্থিক সহায়তা, এমনকি একটি সম্মানজনক পেশায় দাঁড়ানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাদের থেকে কৃতজ্ঞতা পাওয়ার পরিবর্তে, বরং দেখেছি চরিত্রের অবক্ষয়। তারা নিজের পায়ের ওপর দাঁড়ানোর পর, আমাকে অবজ্ঞা করেছে এবং নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য পথভ্রষ্ট হয়ে লোভের পথে চলে গেছে। এই জঘণ্য মন মানসিকতার মূল কারণগুলোর মধ্যে কয়েকটি হলো: ১. নৈতিক শিক্ষার অভাব প্রাথমিক পর্যায়ে নৈতিকতার অনুশীলন ও শিক্ষার অভাব তাদের চরিত্রে গভীর প্রভাব ফেলেছে। ২. অতিরিক্ত মথ্যা এবং অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও ভোগবাদী মানসিকতা অযাচিত প্রতিযোগিতা এবং ভোগবিলাস তাদের আত্মকেন্দ্রিক করে তুলেছে। ৩. লোভের প্রভাব অতিরিক্ত লোভ বিবেক এবং আত্মমর্যাদাকে গ্রাস করে। ৪. কৃতজ্ঞতার অভাব অন্যের সহায়তা এবং ত্যাগকে মূল্যায়ন করার মতো মানবিক বোধের অভাব তাদের মনোভাবকে অসৎ এবং কুতশিত করে তুলেছে। অসৎ মনোভাব মানুষকে নিজের স্বার্থে অন্যকে ধোঁকা দিতে উৎসাহিত করে। • প্রভাব: • ব্যক্তিগত স্তরে আত্মবিশ্বাসের ক্ষতি। • সামাজিক স্তরে বিশ্বাসের অভাব। • অর্থনৈতিক স্তরে দুর্নীতির প্রসার। অতিরিক্ত লোভ মানুষকে ভোগবাদী করে তোলে। • প্রভাব: • মানসিক অশান্তি। • পারিবারিক সম্পর্কের ক্ষতি। • প্রাকৃতিক সম্পদের অপচয়। পরশ্রীকাতরতা অন্যের সাফল্যে ঈর্ষাপ্রসূত মনোভাব সৃষ্টি করে। • প্রভাব: • মানসিক অস্থিরতা। • সম্পর্কের অবনতি। • সামাজিক এবং পারিবারিক বিভেদ। এই মানসিক বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজন ব্যক্তিগত এবং সামাজিক সচেতনতা: ১. নৈতিক শিক্ষা প্রাথমিক পর্যায় থেকে নৈতিক মূল্যবোধ চর্চা নিশ্চিত করতে হবে। . আত্মশুদ্ধি ২. দৈনিক নিজস্ব মূল্যায়ন। • ধর্মীয় এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি। ৩. সামাজিক সচেতনতা সমাজে নৈতিক সংস্কৃতি এবং কঠোর আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। ৪. সাফল্যের পুনঃসংজ্ঞা সাফল্যকে কেবল অর্থ বা ক্ষমতায় সীমাবদ্ধ না রেখে সৎ এবং মানবিক মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে সংজ্ঞায়িত করতে হবে। অসৎ মনোভাব, অতিরিক্ত লোভ, এবং পরশ্রীকাতরতা সমাজের জন্য এক ভয়ংকর ব্যাধি। এগুলো আমাদের মানবিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে। তবে সচেতনতা, নৈতিক শিক্ষা এবং আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে এই সমস্যাগুলোর উত্তরণ সম্ভব। আমরা যদি একে অপরের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং মানবিকতার চর্চা করতে পারি, তবে এই নেতিবাচক গুণগুলোকে জয় করে একটি সুখী, ন্যায়পরায়ণ, এবং সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক দায়বদ্ধতার মাধ্যমেই নৈতিকতার এই পুনর্জাগরণ সম্ভব। লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। ডেল্টা টাইমস্/রহমান মৃধা/সিআর/এমই |
| « পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |