গায়েব চেয়ারম্যানের হঠাৎ ‘হাজিরা’
বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
প্রকাশ: সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫, ৬:২৯ পিএম আপডেট: ১৩.১০.২০২৫ ৬:৩৩ পিএম

গায়েব চেয়ারম্যানের হঠাৎ ‘হাজিরা’

গায়েব চেয়ারম্যানের হঠাৎ ‘হাজিরা’

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার খট্রা–মাধবপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি কাওছার রহমানকে ঘিরে আবারও শুরু হয়েছে বিতর্ক। ২০২৪ সালের আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত দুই ছাত্র হত্যার মামলায় নাম আসার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। প্রায় এক বছর পর, চলতি বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি ইউনিয়ন পরিষদে এসে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পুনরায় গ্রহণের দাবি করেন।

তবে তার এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কাওছার রহমানের বিরুদ্ধে অতীতের ভোট কারচুপি, নির্যাতন, ভূমি দখল ও প্রশাসনিক প্রভাব খাটানোর অভিযোগ নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

 রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে স্থানীয় কয়েক শ মানুষ জড়ো হয়ে চেয়ারম্যানের উপস্থিতির বিরুদ্ধে সরব হন।

রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে স্থানীয় কয়েক শ মানুষ জড়ো হয়ে চেয়ারম্যানের উপস্থিতির বিরুদ্ধে সরব হন।

স্থানীয়দের ভাষ্যে, কাওছার রহমান ছিলেন সাবেক সরকারের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক কর্মী। তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় তিনি অবৈধভাবে প্রভাব খাটিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং বিরোধী মতের ওপর দমন–পীড়ন চালান।

চৌধুরী ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, “তিনি কারচুপি করে ক্ষমতায় এসেছিলেন। তখন অনেক মানুষ ভয়ে মুখ খুলতে পারেনি। এখন পরিস্থিতি বদলেছে, তাই মানুষ সত্য বলছে।”

শালপুকুরিয়া গ্রামের শাকিল হোসেনের দাবি, ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের সময় হাকিমপুরে সংঘটিত দুই ছাত্র হত্যার মামলায় কাওছার রহমানের নাম এজাহারে উল্লেখ ছিল। “তিনি তখন থেকে আত্মগোপনে ছিলেন,” বলেন শাকিল।

২৮ সেপ্টেম্বর কাওছার রহমান ইউনিয়ন পরিষদে এসে সুপ্রিম কোর্ট, স্থানীয় সরকার বিভাগ, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার চারটি ভিন্ন আদেশ প্রদর্শন করে পদে ফেরার বৈধতা দাবি করেন। তবে ইউনিয়নের নয়জন সদস্য ৩০ সেপ্টেম্বর একটি বিশেষ বৈঠকে রেজুলেশন পাস করে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করেন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।

ইউপি সদস্য শাহানুর ইসলাম বলেন, “আমরা শান্তি চাই। কিন্তু এই চেয়ারম্যান পুনরায় দায়িত্ব নিলে এলাকায় অশান্তি বাড়বে।”

বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা মনে করেন, অতীতের বিতর্ক, মামলার ইতিহাস ও দীর্ঘ অনুপস্থিতি তার প্রশাসনিক বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তাদের ভাষায়, একজন অভিযুক্ত ও পলাতক চেয়ারম্যান কীভাবে আবার পদে ফিরতে পারেন—এ বিষয়ে প্রশাসনের ব্যাখ্যা প্রয়োজন।

চৌধুরী ডাঙ্গাপাড়ার জহুরুল ইসলাম বলেন, “যে মানুষ নিজের ইউনিয়নের মানুষকেই নির্যাতন করেছে, তাকে জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে দেখা কঠিন।”

ঘটনা বিষয়ে জানতে কাওছার রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।


ডেল্টা টাইমস্/মো. আবু সাঈদ/সিআর/আইইউ

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
  এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ  
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।

ফোন: ০২-২২৬৬৩৯০১৮, ০২-৪৭১২০৮৬০, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।
ফোন: ০২-২২৬৬৩৯০১৮, ০২-৪৭১২০৮৬০, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com