|
যশোরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের ইট চুরির অভিযোগ
খালেদুর রহমান চৌগাছা (যশোর) থেকে ॥
|
|
যশোরের চৌগাছার মাকাপুর-বল্লভপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের ইট চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে স্কুলের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকসহ এলাকার জনসাধারণের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম মাকাপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে। তবে প্রধান শিক্ষক ইট চুরির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। বর্তমান সরকার শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য সরকারি টেন্ডারের মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো কে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ করছেন। সরকারের এই উন্নয়নকে রুখে দিতে ও মানক্ষুন্ন করতে মাকাপুর-বল্লভপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম ওরফে মাস্টার নুর ইসলাম উঠে পড়ে লেগেছেন। স্কুলের ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত ইট চুরি করে নিজ বাড়িতে রেখে দিয়েছেন। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম তার বাড়িতে ১৭৫ পিচ স্কুলের ইট মজুদ করে রেখে দিয়েছেন। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি হতবম্ভ হয়ে যান। তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। এছাড়া তার বাড়িতে নতুন একটি পাকা ছাগল ঘর দেখা যায়। ![]() যশোরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের ইট চুরির অভিযোগ এলাকাবাসি অভিযোগ করে বলেন স্কুলের ইট দিয়ে ওই ছাগল ঘর করা হয়েছে। তারা আরো জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক আগে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে চাকুরী করতেন। দূর্নীতির অভিযোগে তিনি চাকুরী থেকে বরখাস্ত হন। এছাড়া ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে সরকার মহামারি করোনা ভাইরাসের মোকাবেলায় রাষ্ট্রীয় সকল কর্মসূচি বন্ধ ঘোষনা করেন এবং সবাইকে ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ দেন। অথচ প্রধান শিক্ষক সেই নির্দেশ অমান্য করে ওই দিন ইয়ার গান দিয়ে এলাকায় পাখি মারতে বের হন। ইয়ার গান হাতে নিয়ে রাস্তায় বের হওয়ার ভিডিও এলাকায় ভাইরাল হয়। অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একজন শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর। সেই শিক্ষক যদি এমন সব দূর্নীতির সাথে যুক্ত থাকে তাহলে আমাদের ছেলে মেয়েরা কি শিখবে। ছেলে মেয়েরা তো দেশেরে উন্নয়নে কাজে অংশীদার না হয়ে চুরি শিখবে। তাহলে আমাদের সন্তানদের কে কোথায় পাঠাচ্ছি। একজন শিক্ষকের মাঝে যখন সামাজিকতার কোন বলায় নেই সেক্ষেত্রে ওই শিক্ষকে অবলিম্বে চাকুরীচ্যুত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য ইমান আলী বলেন, আমি বিগত দিনে তিনবার জনপ্রতিনিধি ছিলাম। কিন্তু নুরুল ইসলাম যে একজন প্রধান শিক্ষক তার মধ্যে কোন শিষ্টাচার নেই। একজন শিষ্টাহার বিহীন শিক্ষক কখনোই একটা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হতে পারে না। বল্লভপুর গ্রামের ইসাকুল, বিল্লাল, কামারুল, আব্দুর রহমান জানান, বেশ কয়েকদিন আগে আমরা দেখি স্কুলের জন্য আসা ইটের ট্রাক প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলামের বাড়ির সামনে। ট্রাক ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন স্যারের কিছু ইট লাগবে তাই লাবাচ্ছি। তবে ইটগুলো স্কুলের। স্কুলের নির্মাণ কাজের শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক তাদেরকে দিয়ে স্কুলের ইট দিয়ে ওই ঘর নির্মাণ করে নিয়েছেন। স্কুলের ইট ওনার বাড়ির সামনে দিয়ে আসার সুবাদে তিনি ট্রাক থেকে ইট নামিয়ে বাড়িতে রেখেছেন। যেহেতু ইট দিয়ে ঘর নির্মাণ ও প্লাস্টার করা হয়ে গেছে সেজন্য এখন আর বোঝা যাচ্ছেনা ইট গুলো স্কুলের ওই ইট কিনা। এ বিষয়ে স্কুলের সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান দেবাশীষ মিশ্র জয় বলেন, স্কুলের ইট যদি অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে পাওয়া যায় তবে আমি তদন্তপূর্বক ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের কাজে যে বা যারা বাধা প্রদান করবো তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি ইট চুরির বিষয় অস্বীকার করেন। তিনি বলেন আমি ইট কিনে নিয়ে এসেছি। তবে ১৭৫ পিচ ইটের কোন ভাইচার তিনি দেখাতে পারেন নি। অপরদিকে ইয়ারগান হাতে নিয়ে পাখি মারার কথার প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ওটা অনেক আগের ভিডিও। ডেল্টা টাইমস/খালেদুর রহমান/সিআর/জেড এইচ |
| « পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |