নন এমপিওদের ভাগ্যে আদৌ কি এমপিওর আলোকছটা ঝলসাবে?
মোঃ মোকারম হোসেন
|
দীর্ঘ আন্দোলন, রাষ্ট্রীয় অবহেলা, নির্যাতন, লাঞ্চনা, সামাজিক তিরস্কার, পারিবারিক ভৎসনা ও নিজস্ব অসহনীয় ত্যাগের বিনিময়ে, ২০১৮ সালের ভুলেভরা নীতিমালার আলোকে,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২৩ অক্টোবর '২০১৯ তরিখে ২,৭৩০টি নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষনা দেন। তবে শিক্ষকদের প্রবল আন্দোলনের কারণে ২০ ও ২২ শে অক্টোবর'২০১৯ তারিখে শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে সে বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রী আরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল!দ্রুত নীতিমালা সংশোধনী কমিটি করবেন,কমিটিতে সংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদককে সদস্য করবেন। এছাড়া আরো বলেছিলেন,স্বল্প সময়ের মধ্যে শিক্ষক নেতাদেরকে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সক্ষাত করিয়ে দিবেন। ![]() নন এমপিওদের ভাগ্যে আদৌ কি এমপিওর আলোকছটা ঝলসাবে? তারই ধারাবাহিকতায় ১২ নভেম্বরের'২০১৯ তারিখে,স্কুল ও কলেজের নীতিমালা সংশোধন কমিটি করে দেন। সেই কমিটিতে সংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদককে সদস্য করেন। তারই আলোকে ৪ ডিসেম্বর,২০১৯ প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।এবং সর্বশেষ ১১ই মার্চের ২০২০ তারিখে, পঞ্চম সভা অনুষ্ঠিত হয়।দুর্ভাগ্যবশত সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশও বৈশ্বিক মহামারী(কোভিড' ২০১৯) করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হলে সবকিছু স্থীর হয়ে পরে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বে দেশ সামলে উঠতে এগিয়ে যাচ্ছে। এবং মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রীর চেষ্টায় শিক্ষা ক্ষেত্রেও শান্তি ফিরতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী যোগ্যতার বিচার না করেই২৫ জুন'২০২০ সকল নন এমপিও শিক্ষক কর্মচারীদেরকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশেষ উপহার প্রদান করেছেন।সে কারণে সংগঠন কৃতজ্ঞতাও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।তাছাড়া শিক্ষকদের সেই রেশ কাটতে না কাটতেই,৬ জুলাই'২০২০ তারিখে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মননীয় মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক (এম'পি) শিক্ষকদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার প্রদান কালে,"শর্ত শিথিল করে সকল নন এমপিওদের এমপিওভুক্ত করা হবে "বলে,এই মর্মে বার্তা দেন শিক্ষকরা বিশেষ উপহার, শর্ত শিথিল করে এমপিওভুক্তি দুটো বার্তা পেয়ে আবারও যখন আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন! ঠিক তখনই আবার নীতিমালার সংশোধনীর জন্য,ভার্চুয়াল মিটিং শুরু হয়।ইতোমধ্যে পাঁচটি মিটিং হলে বিভিন্ন ভাবে জানা যায় যে,নীতিমালাটি বৈষম্যমূলকএবং অনেক ক্ষেত্রে কঠিন থেকে কঠিনতম হতে যাচ্ছে।যা নন এমপিও শিক্ষকদের জন্য ভালো সংবাদ নয়। যারপরনাই শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।তাই আবারও রাজপথে নামার জন্য শিক্ষকেরা কেন্দ্রীয় নেতাদের ডাকের অপেক্ষায় আছেন। শিক্ষকেরা আশা করেছিল শিক্ষা মন্ত্রী তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শিক্ষক নেতাদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ করে দিবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের বাস্তবাতার কথা সরাসরি জানতে পারলে,দ্রুতই সৃষ্ট সমস্যার সমাধান হবে,কিন্তু আজও তা কোনো এক অদৃশ্য কারণে আলোর মুখ দেখলোনা।শিক্ষকরা আরও আশা করেছিল যে,নীতিমালা কমিটিতে তাদের প্রতিনিধি থাকছেসে কারণে শিক্ষকদের প্রাণের দাবী।সংগঠনের প্রস্তাবিত পরিশিষ্ট চৌদ্দ ধারা বাস্তবায়ন হবে।কিন্তু লক্ষ করা যাচ্ছে তা বাস্তবায়ন হওয়ার কোন লক্ষণ নেই। সত্যিকার অর্থে মুজিববর্ষে সকল স্বীকৃতি প্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির আওতায় আনতে চাইলে,প্রতিষ্ঠান গুলোর অস্তিত্ব রাখতে চাইলে,অবসর সময়ে শিক্ষকদের শুন্য হাতে ঘরে ফিরাতে না চাইলে,অবশ্যই সংগঠনের প্রস্তাবনায় প্রস্তাবিত ১৪ ধারাটি গ্রহণ করে তা পূর্ণরুপে বাস্তবায়ন করতে হবে।সংশোধনী নীতিমালাতে যা হতে যাচ্ছে,তাতে কি শিক্ষকদের দীর্ঘ আন্দোলনের প্রত্যাশা পূরণ হবে?তারা রাষ্ট্রীয় সামাজিক পারিবারিক ভাবে বাকী জীবনটুকু মনুষত্বের মর্যাদার আওতায় ফিরতে পারবে? নাকি বিনাবেতনে সংসারের ঘানি টানতে না পেরে,লজ্জায়,ক্ষোভের, অসহনীয় যন্ত্রনার মোকাবিলা করতে না পেরে যারা আত্মহত্যা করেছেন! তাদের মতো বাকীরও তাদের দলে যোগ দিবে? মোঃ মোকারম হোসেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশন, কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা। |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |