বগুড়ায় তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত জনজীবন
পারভীন লুনা,বগুড়া
|
বগুড়ায় তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত জনজীবন পৌষের শুরুতেই বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত। দিন দিন শীতের তীব্রতা বাড়ছে। বগুড়ায় গত কয়েক দিনে শীতের তীব্রতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিপাকে পড়েছেন ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষরা। বিশেষ করে সন্ধ্যা থেকে সকাল ১০ থেকে ১১ টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে চারদিক। সামনের সব কিছুই দেখা যায় ধোঁয়াশার মত। ঘন কুয়াশায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে কৃষক, শ্রমজীবী-হত দরিদ্র ও ছিন্নমুল মানুষরা। বিশেষ করে শ্রমজীবীদের দূর্দশা চরমে। কাজে বের হতে পারছেন না অনেকেই। ক্ষেতে পঁেচ যাচ্ছে রবি শস্য। শীতের প্রকোপে দেখা দিয়েছে নানা রোগ। হাসপাতালে বেড়ে চলেছে শিশু ও বয়স্ক রোগী সংখ্যা। প্রচণ্ড শীত আর ঘন কুয়াশায় পঁচে যাচ্ছে শিম, লাউ, করলা, মিষ্টিকুমড়া, আলু, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন রবি শস্য। ফসল রক্ষায় সার ও কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো কাজ হচ্ছে না। ফলে কৃষকদের দিন কাটছে হতাশায়। বগুড়া জেলায় চলতি রবি মৌসুমে ১২ হাজার ৮১৩ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাকসবজির চাষ হয়েছে। ![]() বগুড়ায় তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত জনজীবন তবে কৃষি বিভাগ বলছে, বৈরী আবহাওয়ায় রবি ফসল রক্ষায় প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আর আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, জানুয়ারির শুরুতেই টানা শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়বে দেশ। এবার বগুড়ার ১২ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাহিদার চেয়েও বেশি রবি শস্য চাষ করেছে কৃষক। টানা বন্যার কারণে অন্য সময়ে সবজির বাজার ছিল চড়া। এ কারণে এবার সবজি চাষ করা হয় বেশি। কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই তীব্র শীতের সঙ্গে ঘন কুয়াশায় কৃষকের স্বপ্নের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নষ্ট ফসল ও পাতা পঁচা রোগ থেকে বাঁচাতে কয়েক দফা কীটনাশক প্রয়োগ করেও মিলছে না প্রতিকার। দুব্লাগাড়ি গ্রামের সবজি চাষি ইসমাইল হতাশ কণ্ঠে বলেন, ‘পাঁচ বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছি। ঘন কুয়াশা ও শীতে শিম গাছের পাতা লাল হয়ে পচে যাচ্ছে। কীটনাশক দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। গাছ বাঁচাতে না পারলে বিশাল আর্থিক ক্ষতি হয়ে যাবে।’ শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে জমির ফসল নিয়ে একইভাবে চিন্তিত ওই গ্রামের পটল চাষি মিজানুর, বেগুন চাষি মেহের, করলা চাষি সাদেকুল ও পেঁয়াজ চাষি রহমান। স্থানীয়রা জানায়, গত মৌসুমে ভালো দাম পেয়ে এবারও শত শত বিঘা জমিতে সবজি চাষ করেন কৃষক। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ায় আলুগাছের পাতা কুঁচকে যাওয়াসহ দেখা দিয়েছে পচনজনিত রোগ। ![]() বগুড়ায় তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত জনজীবন বগুড়ার ১২ উপজেলার মধ্যে সদর, গাবতলী, শাজাহানপুর, শেরপুর ও শিবগঞ্জ এলাকা সবজি চাষের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। এসব উপজেলায় বছরজুড়েই রকমারি সবজির চাষ হয়। এর মধ্যে শাজাহানপুর ও শেরপুরে সবজি চাষের পাশাপাশি উৎপাদন করা হয় সবজির চারা। নির্দিষ্ট অঞ্চল ছাড়াও জেলার অন্য উপজেলাগুলোতেও কমবেশি সবজি চাষ হয়ে থাকে। সদর উপজেলার শাখারিয়া ইউনিয়নের কালিবালা গ্রামের কৃষকরা জানান, শীতকালীন সবজি আবাদে ফলন ভালো হয় এবং কৃষক লাভের মুখ দেখেন। তবে আবহাওয়ার একটু হেরফের হলে সবজির ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বাড়তি বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশা হলে ফসলের ক্ষতি হয়। এবার সেই ঝুঁকিতেই পড়েছেন তাঁরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক দুলাল হোসেন বলেন, কৃষকদের কাছে মোবাইল নম্বর দেওয়া আছে। এ ছাড়াও আমরা কৃষকদের মধ্যে পরামর্শপত্রও বিতরণ করছি।’ ডেল্টা টাইমস্/পারভীন লুনা/সিআর/জেড এইচ |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |