যুদ্ধবিরতির চুক্তি স্বাক্ষরে গাজায় আনন্দ-উচ্ছ্বাস
ডেল্টা টাইমস্ ডেস্ক:
|
![]() যুদ্ধবিরতির চুক্তি স্বাক্ষরে গাজায় আনন্দ-উচ্ছ্বাস চুক্তি স্বাক্ষরের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর গতকাল রাতেই আনন্দ মিছিল বের করেন গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের বাসিন্দারা। কিশোর তরুণরা বাঁশি-খঞ্জনি-ড্রাম বাজিয়ে, নেচে গেয়ে উল্লাস শুরু করেন। কেউ খুশিতে কাঁদছেন-হাততালি দিচ্ছেন, কেউ বাঁশি বাজাচ্ছেন, কেউ গান গাইছেন-নাচানাচি করছেন এবং চিৎকার করে বলছেন ‘আল্লাহু আকবর’। ইমান আল কৌকা নামের এক তরুণী এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। রয়টার্সকে তিনি বলেন, আজ আমাদের আনন্দের দিন, আজ আমাদের দুঃখেরও দিন। এটা এমন দিন যার জন্য আমরা হাসব—আবার যুদ্ধে আমরা যাদের হারিয়েছি, যা যা হারিয়েছে—সেসব স্মরণ করে কাঁদব। আমরা শুধু আমাদের বন্ধু, স্বজন এবং বাড়িঘরই হারাইনি। আমরা আমাদের শহর হারিয়েছি। এই যুদ্ধের মাধ্যমে ইসরায়েল আমাদের প্রাগৈতিহাসিক আমলে ঠেলে দিয়েছে। ইসরাইলি বাহিনীর বোমায় বাড়ি ঘর হারিয়ে গত বছর খান ইউনিসের দেইর আল বালাহ এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন গাজার অপর বাসিন্দা আহমেদ দাহমান। রয়টার্সকে তিনি জানান, ইসরাইলি বাহিনীর বোমার আঘাতে বাড়িঘরের পাশাপাশি নিজের বাবাকেও হারিয়েছেন তিনি; কিন্তু তাকে দাফন করতে পারেননি। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বাবার মরদেহ রেখেই নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটতে হয়েছে তাদের। রয়টার্সকে দাহমান বলেন, অবশেষে গাজায় রক্তপাত বন্ধ হচ্ছে এবং আমাদের জীবন রক্ষা পাচ্ছে—এটা আনন্দের খবর। তবে আমি যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা শঙ্কিত। আমরা যখন ফিরব, তখন দেখব যে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। আমার বাবার লাশ ধ্বংসস্তূপের তলায় রেখে পালাতে বাধ্য হয়েছিলাম। বাড়ি ফিরে আমার প্রথম কাজ হবে বাবার দেহাবশেষ খুঁজে বের করে তার দাফন সম্পন্ন করা। গত ২৯ সেপ্টেম্বর সোমবার স্থানীয় সময় বিকালে ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন ও দপ্তর হোয়াইট হাউসে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নতুন একটি পরিকল্পনার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তাৎক্ষণিকভাবে ইসরাইল ও মধ্যস্থতাকারী দুই দেশ মিসর ও কাতার সম্মতি দিলেও হামাস তখনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। পরে ৩ অক্টোবর শুক্রবার হামাস সম্মতি জানানোর পরের দিন ৪ অক্টোবর ইসরাইলকে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে বলেন ট্রাম্প। তার পর ৬ অক্টোবর মিসরের লোহিত সাগর তীরবর্তী পর্যটন শহর শারম আল শেখ- এ ট্রাম্পের প্রস্তাবের ওপর বৈঠক শুরু হয় ইসরাইল, হামাস, মিসর, যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের প্রতিনিধিদের মধ্যে। সেই বৈঠকে দুই দিনেরও বেশি সময় ধরে আলোচনা চলার পর গতকাল রাতে ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রাথমিক পর্যায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বাক্ষর করেছে ইসরাইল-হামাস। এই পর্যায়টির স্থায়িত্ব হবে ৬ সপ্তাহ। এই ছয় সপ্তাহে নিজেদের হাতে থাকা সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। এর পরিবর্তে ইসরাইল গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ, ইসরাইলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি এবং গাজা থেকে পর্যায়ক্রমে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে। ডেল্টা টাইমস্/আইইউ |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |