করপোরেট ট্যাক্স ২ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০১৯, ১২:০০ এএম

করপোরেট ট্যাক্স কমানো হলে আরও অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী করের আওতায় প্রবেশ করতে পারবে। দীর্ঘসময় পর বাংলাদেশ সরকার করপোরেট ট্যাক্স কমানোর সুফল ভোগ করতে পারবে। তাই পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত এবং তালিকার বাইরের সব কোম্পানির করপোরেট ট্যাক্স ২ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব জানিয়েছে দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বাংলাদেশ (আইসিএবি)।
রোববার রাজধানীর সিএ ভবনে আগামী জাতীয় বাজেটের ওপর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের ভাবনা শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই প্রস্তাব জানায় সংগঠনটি।
প্রস্তাবনায় বক্তারা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর চেয়ে আমাদের দেশের করপোরেট ট্যাক্স হার অনেক বেশি। তাই বিদেশি বিনিয়োগ পেতে হলে এই মুহূর্তে করপোরেট ট্যাক্স কমানো অত্যন্ত জরুরি।ট্যাক্সেশন ও করপোরেট ল’জ কমিটির চেয়ারম্যান ও আইসিএবির কাউন্সিল মেম্বার মো. হুমায়ুন কবীর এফসিএ সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

আইসিএবির প্রেসিডেন্ট এএফ নেছারউদ্দিন এফসিএ বক্তব্য রাখেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি এনকেএ মুবিন এফসিএ এবং মো. মনিরুজ্জামান এফসিএ, সাবেক সভাপতি ও কাউন্সিল সদস্য ড. আবু সাঈদ খান এফসিএ এবং নাছির উদ্দিন আহমেদ এফসিএ, কাউন্সিল সদস্য মোহাম্মদ ফুরকান উদ্দিন এফসিএ এবং মারিয়া খাওলাদার এফসিএ, আইসিএবির ট্যাক্সেশন ও করপোরেট ল’জ কমিটির সদস্য স্নেহাশীশ বড়–য়া এফসিএ এবং রাকেশ সাহা এফসিএ, আইসিএবি সচিব মেজর জেনারেল মুহাম্মদ ইমরুল কায়েস, এনডিসি, পিএসসি (অব.) এবং পরিচালক (টেকনিক্যাল) মাহবুব আহমেদ সিদ্দীকি এফসিএ।

আইসিএবি সভাপতি বলেন, বর্তমানে যে সংখ্যক জনগণ কর দেন তাদের সংখ্যা ভবিষ্যতে বৃদ্ধি করা না গেলে আমাদের দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে পারবে না। সে জন্য ব্যবসায়ীদের সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। বর্তমানে মাত্র ১ শতাংশ মানুষ ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেয়। কারণ জনগণের মধ্যে এখনও ট্যাক্স দেওয়ার ভীতি কাজ করে। সেই ভয় দূরীকরণে এনবিআরকে কার্যকরি উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেন, ট্যাক্সরেট কমালেই রাজস্ব কমে যাবে এই রকম আশঙ্কা করা ঠিক হবে না। কারণ করপোরেট ট্যাক্স কমানো হলে আরও অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী করের আওতায় প্রবেশ করতে পারবে এবং বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান বৃদ্ধি হবে।
সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর-এর সঙ্গে আলোচনায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আয়কর ও মূল্য সংযোজন কর সংক্রান্ত যেসব মতামত আইসিএবি তুলে ধরেছে সেগুলো হচ্ছেÑ বিভিন্ন সেক্টরের করপোরেট ট্যাক্স ২ শতাংশ কমিয়ে আনা। বিদ্যমান করদাতাদের ওপর অতিরিক্ত কর দায় না চাপিয়ে করযোগ্য ব্যক্তিদের কর নেটে অন্তর্ভুক্ত করে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করা। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি শ্রেণির জন্য বিদ্যমান করের স্তর দ্বিতীয় ধাপ ৫ শতাংশ থেকে শুরু করা এবং সর্বোচ্চ কর হার ২৫ শতাংশে সীমিত রাখার জন্য প্রস্তাব করেছে আইসিএবি।
এনবিআর কর প্রদান সহজীকরণের নানা উদ্যোগ নিয়েছে কিন্তু বাস্তবে কর গণনা ও রিটার্ন ফরম ততটা সহজ নয়। বিনিয়োগ কর রেয়াতের জন্য নানা প্রকার হিসাব করতে হয় যা অত্যন্ত জটিল। আয়ের ২৫ শতাংশ এর ওপর সরাসরি ১৫ শতাংশ কর রেয়াত প্রদান করলে জটিলতা এড়ানো যেতে পারে।
করের আওতা বাড়াতে কর প্রদানে সক্ষম ব্যক্তি চিহ্নিত করতে, ন্যূনতম আয়কর আদায়ে কর জিডিপি অনুপাত বাড়াতে এবং জাতীয় রাজস্ব বৃদ্ধিতে করের আওতা বাড়ানোর জন্য জোরদার ও অর্থবহ জরিপ কার্য পরিচালনা করা। সব ইটিআইএন ধারীগণের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে রিটার্ন দাখিল সংখ্যা বৃদ্ধি করা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে ৩৬ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত রাখা। ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইন অনুযায়ী চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট করদাতা অনুমোদিত প্রতিনিধি হিসেবে শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু এ বিধান ২০১২ সালের মূসক আইনের ১৩০ ধারায় সন্নিবেশিত হয়নি। আইসিএবি এ ধারায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের সংযোজন করার দাবি জানায়। ১৯৯১ সালের আইন অনুযায়ী যেকোনো পর্যায়ে কেবল মাত্র ১০ শতাংশ অর্থ জমার মাধ্যমে আপিল করার বিধান ছিল এবং সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নিকট আপিল করার জন্য কোনো প্রকার অর্থ জমা করার বিধান নাই। কিন্তু ২০১২ সালের মূসক আইন মোতাবেক প্রতিটি আপিল পর্যায়ে হাইকোর্টে আপিল দায়েরকালে ১০ শতাংশ অর্থ জমার বিধান রয়েছে যা অযৌক্তিক। আইসিবি এ ক্ষেত্রে ১৯৯১ সালের বিধান বলবৎ রাখার প্রস্তাব করে।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
  এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ  
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।

ফোন: ০২-২২৬৬৩৯০১৮, ০২-৪৭১২০৮৬০, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।
ফোন: ০২-২২৬৬৩৯০১৮, ০২-৪৭১২০৮৬০, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com