শিশুদের জন্যই হবে আগামী দিনের বাংলাদেশ: উপদেষ্টা শারমীন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
|
![]() শিশুদের জন্যই হবে আগামী দিনের বাংলাদেশ: উপদেষ্টা শারমীন সোমবার (৬ অক্টোবর) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বিশ্ব শিশু দিবস ২০২৫’ ও ‘শিশু অধিকার সপ্তাহ’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এনডিসি সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, ইউনিসেফ প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স, শিশু বক্তা রূপ সঞ্চারী চর্চা ও মো. সামিউল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক (যুগ্ম সচিব) দিলারা বেগম। উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, “বিশ্ব শিশু দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য—‘শিশুর কথা শুনব আজ, শিশুর জন্য করব কাজ’। এই স্লোগান বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা এমন একটি দেশ গড়তে চাই, যেটিকে দেখে বিশ্ব বলবে—এই দেশটি সত্যিই শিশুদের জন্য।” তিনি বলেন, “একটি সুন্দর দেশ গঠনের যে সংগ্রাম আমরা চালিয়ে যাচ্ছি, তাতে তোমরাই (শিশুরা) অনন্য ভূমিকা রাখছো। গত বছর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তোমরা অকপটে অংশগ্রহণ করে বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গঠনে বীরত্বগাথা রচনা করেছো। এতে প্রমাণ হয়েছে, তোমরাই দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছো।” তিনি আরও বলেন, “যারা এতদিন অন্যায়, দুর্নীতি ও অপশাসন চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে তোমরা নির্ভীকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছো। সত্যি বলতে, জুলাই আন্দোলন না হলে আমরা বুঝতেই পারতাম না—আমাদের কোমলমতি শিশুরা এই দেশকে কতটা ভালোবাসে। তোমরা অন্যায়ের সঙ্গে আপস না করে মাথা উঁচু করে লড়াই করতে জানো—এই প্রজন্মই আমাদের আশা।” উপদেষ্টা বলেন, “বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২৫ উদযাপনের লক্ষ্য একটাই—শিশুদের মুখে হাসি ফোটানো, তাদের স্বপ্নে অনুপ্রেরণা যোগানো, জীবনের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।” শারমীন এস মুরশিদ বলেন, “১৯৫৪ সালে ইউনিসেফ প্রথম বিশ্ব শিশু দিবস শুরু করে শিশুদের কল্যাণ ও অধিকার সুরক্ষার সচেতনতা বাড়াতে। ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ (ইউএনসিআরসি) শিশুদের চারটি মৌলিক অধিকার নির্ধারণ করে—বেঁচে থাকা, বিকাশ, সুরক্ষা ও অংশগ্রহণের অধিকার। যদিও বাংলাদেশের সংবিধান ও আইন এসব অধিকার নিশ্চিত করেছে, বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই আমরা এখনো পিছিয়ে আছি। তা নিরসনে আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি।” তিনি বলেন, “বর্তমান সরকার শিশুদের প্রতি গভীর স্নেহ ও ভালোবাসা পোষণ করেন। শিশুদের কল্যাণে নানামুখী উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম—শিশু-বান্ধব বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিশেষ ‘শিশু আদালত’ স্থাপন, যা শিশুদের জন্য পুনর্বাসনমুখী ও প্রগতিশীল বার্তা বহন করছে।” “ইউনিসেফ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সমাজকল্যাণ খাতে ১,২০০ জন অতিরিক্ত সমাজকর্মী ও হেল্পলাইন কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে, যারা শিশু সুরক্ষা ও পরিবারের সহায়তায় কাজ করছেন। এছাড়া ২০২৪ সালের ২৪ নভেম্বর (ইলো) ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় যৌথভাবে ‘চাইল্ডকেয়ার রোডম্যাপ’ উদ্বোধন করে, যার লক্ষ্য সারাদেশে সাশ্রয়ী ও মানসম্মত শিশুসেবা নিশ্চিত করা—এটি নারীর কর্মসংস্থান ও শিশু সুরক্ষায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।” উপদেষ্টা বলেন, “চলুন আমরা সবাই মিলে প্রতিজ্ঞা করি—শিশুরা যেন নিরাপদে বেড়ে উঠতে পারে, সুযোগ পায়, স্বপ্ন পূরণ করতে পারে—এমন একটি বাংলাদেশ গড়াই আমাদের লক্ষ্য।” অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনে নিহত ৬২ জন শিশুর পরিবারকে সম্মাননা ও আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। এর আগে উপদেষ্টা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ‘নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট’ আয়োজিত ‘বিশ্ব সেরিব্রাল পালসি দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। সেখানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, সেরিব্রাল পালসি আক্রান্ত শিশু, অভিভাবক ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ডেল্টা টাইমস্/আইইউ |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |