বিশ্বকাপে প্রথমবার পাঁচ লাখ জনসংখ্যার দেশ কেপ ভার্দে
ডেল্টা টাইমস ডেস্ক:
|
![]() বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করার পর কেপ ভার্দের খেলোয়াড়দের উদ্যাপন/ ছবি ফিফা রাজধানী প্রাইয়ায় কেপ ভার্দে প্রথমার্ধে গোল না পেলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দলকে এগিয়ে দেন ডেইলন লিভ্রামেন্তো। ছয় গজ বক্সে প্রতিপক্ষের রক্ষণের ভুলে পাওয়া বল জালে পাঠান। অল্প সময় পরেই উইলি সেমেদো দুর্দান্ত এক ভলিতে গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। অতিরিক্ত সময়ে অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার স্টোপিরা গোল করে ব্যবধান তিনে উন্নীত করলে ১৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হয় উল্লাসের বন্যা। আটলান্টিক মহাসাগরে ১০টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত কেপ ভার্দের জনসংখ্যা ৫ লাখ ২৫ হাজারের কম (বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী), যা ঢাকা সিটি করপোরেশনের জনসংখ্যার (বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে ২০২৩ সালে দুই সিটি করপোরেশনের জনসংখ্যা আনুমানিক ১ কোটি ৩ লাখ) মাত্র ৫.১০ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো অঙ্গরাজ্য থেকে কেপ ভার্দের জনসংখ্যা কম। জনসংখ্যার হিসাবে কেপ ভার্দে বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার সুযোগ পাওয়া দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশও বটে। এর আগে আইসল্যান্ড ক্ষুদ্রতম দেশ হিসেবে ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল। ১৯৭৫ সালে পর্তুগালের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর কেপ ভার্দে প্রথমবার বিশ্বকাপে যাওয়ার লড়াইয়ে নামে ২০০২ সালে। যদিও সফল হতে অপেক্ষা করতে হলো প্রায় ২৩ বছর। আফ্রিকা কাপ অব নেশনসে (আফকন) সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চমক দেখিয়েছে কেপ ভার্দে। ২০১৩ সালে অভিষেকেই তারা খেলেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে, পুনরায় সেই সাফল্য আসে ২০২৩ সালেও। বর্তমানে তারা ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৭০তম। ![]() বিশ্বকাপে প্রথমবার পাঁচ লাখ জনসংখ্যার দেশ কেপ ভার্দে তবে এসওয়াতিনির বিপক্ষে প্রাইয়ায় দ্বিতীয় সুযোগটি আর হাতছাড়া করেনি তারা। দারুণ এক জয়ে আফ্রিকা থেকে ষষ্ঠ দেশ হিসেবে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে কেপ ভার্দে। দেশের এমন গৌরবময় মুহূর্তে মাঠে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট জোসে মারিয়া নেভেসও। কেপ ভার্দে মূলত পর্যটন খাতেই বেশি পরিচিত। খেলাধুলায় বড় সাফল্যের নজির খুবই কম। ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে বক্সার ডেভিড দে পিনা দেশের ইতিহাসে প্রথম অলিম্পিক পদক (পুরুষদের ফ্লাইওয়েট বিভাগে ব্রোঞ্জ) এনে দেন। মাত্র ১২ দলের ঘরোয়া লিগ নিয়ে গঠিত দেশটির ফুটবল বিদেশে খেলা খেলোয়াড়দের ওপর নির্ভরশীল। আইরিশ ক্লাব শার্মক রোভার্সের ডিফেন্ডার রবার্তো লোপেজকে জাতীয় দলে ডাকা হয়েছিল লিঙ্কডিনের মাধ্যমে! লোপেজ বলেন, ‘আমার বাবা সাও নিকোলাও দ্বীপের মানুষ। ১৬ বছর বয়সে তিনি দেশ ছেড়ে চলে যান। কাজ আর ফুটবলের সুযোগের খোঁজে অনেকে দেশ ছাড়ে। আমরা আসলে সারা পৃথিবীতেই ছড়িয়ে আছি। একসঙ্গে থাকলে আমরা কী করতে পারি, সেটাই এখন সবাই দেখছে।’ কেপ ভার্দের বর্তমান দলে ইউরোপে শীর্ষ পাঁচ লিগে খেলা খেলোয়াড় নেই। বাছাইপর্বে দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা নেদারল্যান্ডসে জন্ম নেওয়া ফরোয়ার্ড লিভ্রামেন্তো। তিনি খেলেন পর্তুগিজ লিগে ১৪তম স্থানে থাকা ক্লাব কাসা পিয়ায়। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে দলের কোচের দায়িত্বে থাকা বুবিস্তা নিজেও ছিলেন সাবেক জাতীয় ফুটবলার। তাঁর অধীন কেপ ভার্দে গড়ে তুলেছে সুসংগঠিত রক্ষণভাগ, দক্ষ মিডফিল্ড আর সৃজনশীল আক্রমণভাগ। এর আগে আফ্রিকান নেশনস কাপে ঘানাকে হারিয়ে এবং মিসরের সঙ্গে ড্র করে সবাইকে চমকে দিয়েছিল তারা। এখন দ্বীপদেশটির মানুষ তাকিয়ে আছে ৪ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপের ড্রয়ে, যেখানে জানতে পারবে কোন কোন বিশ্ব পরাশক্তির মুখোমুখি হবে তারা। কেপ ভার্দের আগে আফ্রিকা অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছে আলজেরিয়া, মিসর, মরক্কো, তিউনিসিয়া ও ঘানা। আফ্রিকার মোট নয়টি গ্রুপের মধ্যে এখনো তিনটি গ্রুপের ভাগ্য নির্ধারণ বাকি। ২০২৬ বিশ্বকাপে আফ্রিকা অঞ্চলের বাছাই উত্তীর্ণ হয়ে সরাসরি জায়গা করবে নয়টি দল। ইন্টারকনফেডারেশন প্লে–অফের মাধ্যমে আরেকটি দলের বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ আছে। ডেল্টা টাইমস/সিআর/এমই |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |