রেকর্ডের পর রেকর্ড জনপ্রশাসনে
ডেল্টা টাইমস্ ডেস্ক:
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫, ৬:৫২ পিএম

রেকর্ডের পর রেকর্ড জনপ্রশাসনে

রেকর্ডের পর রেকর্ড জনপ্রশাসনে

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত দুই দশকে একদিনের জন্যও সচিব ছাড়া না থাকলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে ২১ দিন এ পদে নিয়মিত কোনো কর্মকর্তা না থাকার রেকর্ড হয়েছে। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ইতিহাসে অবসরে যাওয়ার ৮-৯ বছর পর কোনো কর্মকর্তাকে চুক্তিভিত্তিক সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সচিব তো বটেই, দ্বিতীয় সচিবও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে আছেন।

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সচিবরা নির্দিষ্ট পদেই তার মেয়াদ শেষ করেন। এটাই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের রীতি। এখন চুক্তিভিত্তিক সচিবদের নজিরবিহীনভাবে বদলি করা হচ্ছে। বিশেষ প্রয়োজনে বিশেষ ব্যক্তিকে নিয়োগের প্রয়োজন হলেই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়।

সেই উদ্দেশ্য পূরণ হলে তাকে বিদায় করা হয় বা প্রয়োজনে চুক্তি বাড়ানোও হয়। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে গুরুত্বহীন পদে কোন আইন ও বিধিতে বদলি করা হচ্ছে? এইসব বদলিতে জনস্বার্থ কোথায়?

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া জনপ্রশাসন সচিব নিজেই বদলি কবুল করে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হয়েছেন। এখানেও হয়েছে নতুন রেকর্ড।প্রশাসনের তৃতীয় শীর্ষ পদ থেকে নামসর্বস্ব জায়গায় পদায়নের পরও সরকারে ঝুলে আছেন তিনি।

একই পথে হেঁটেছেন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সাবেক স্বাস্থ্য সচিব, সাবেক শিক্ষা সচিবসহ কয়েকজন কর্মকর্তা।

অগুরুত্বপূর্ণ পদে বদলি হওয়া চুক্তিভিত্তিক সচিবরা এক-এগারোর সরকারের সময় এনবিআর চেয়ারম্যান বদিউর রহমানের দেখানো পথ অবলম্বন করলে ব্যক্তিগতভাবে উজ্জ্বল হওয়ার সঙ্গে প্রশাসন ক্যাডারের মুখ উজ্জ্বল হতো।

অন্তর্বর্তী সরকারের চুক্তিভিত্তিক সচিবদের অনেকে অবসরের এক দশক পর নিয়োগ পেয়েও পদের মায়া ত্যাগ করতে পারছেন না। উল্টো অনেকে বিশ্বব্যাংকে যুগ্মসচিব অবস্থানের একটি পদে যাওয়ার জন্য তদবির করছেন। এমন কর্মকর্তাদের কাছে জুনিয়ররা কী শিখবেন? এমন মানের কর্মকর্তারা একটি ভঙ্গুর প্রশাসনকে ঠিক করবেন? এ কারণেই হয়তো প্রশাসনে প্রত্যাশিত উন্নতি হয়নি বা হচ্ছে না।

ডিসি নিয়ে বহুমুখী জটিলতা


চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগের দুটি জেলার ডিসি কর্মস্থলে যোগদানের পরপরই বেপরোয়া আচরণের তথ্য সরকারের কাছে থাকার পরও তাদের প্রত্যাহার করা হয়নি । এখানেই শেষ নয়। ২২ দিন হয়ে গেলেও দেশের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ জেলা সদর চট্টগ্রামে এখনো ডিসি নিয়োগ দিতে পারেনি। পুরনো ডিসি প্রত্যাহারের দিনই নতুন ডিসির প্রজ্ঞাপন হয়েছে। তারপর এতদিন কেটে গেলেও নতুন ডিসি চট্টগ্রামে যোগ দেননি। 

কক্সবাজারের ডিসি নিয়োগ হওয়ার পর উচ্চমহলে দ্বন্দ্বের কারণে প্রথমে তাকে স্টেশনে যেতে মানা করা হয়। ৮ দিন পর আবার তাকেই পাঠানো হয়।

এদিকে ২০ জন ডিসি যুগ্মসচিব পদোন্নতি পাওয়ার ৭ মাস পরও মাঠে কাজ করছেন। হাজারের মতো যুগ্মসচিব প্রশাসনে থাকার পরও নতুন পদোন্নতি প্রয়োজন ছিল না। 

অন্যদিকে নির্বাচনকালীন সময়ে প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার কারণে ২০ জনের বেশি সাবেক ডিসিকে বাধ্যতামূলক অবসরসহ অর্ধশতাধিক সাবেক ডিসিকে ওএসডি বা অগুরুত্বপূর্ণ পদে বদলি করা হয়েছে। 

জানা যায়, ২০২৪ সালে ডিসিরা যে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের অধীনে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের কারণে শাস্তির মুখে পড়ছেন, সরকার সেই মন্ত্রিপরিষদ সচিবের চুক্তিটি পর্যন্ত বাতিল করেনি। উল্টো প্রশংসাপত্রসহ স্বাভাবিক বিদায় দিয়েছে। 

জনপ্রশাসন অভিভাবকহীন কেন?

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জন্য পৃথক উপদেষ্টা নেই। প্রথম দিকে এক উপদেষ্টা অনানুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পালন করলেও তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর পরিস্থিতির বড় উন্নতি হয়নি।

গত ২০ জানুয়ারি অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। নাহিদ ইসলামের পর এই কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন মাহফুজ আলম। গত ২৭ আগস্ট এই কমিটির নতুন সদস্য সচিব করা হয়েছে পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসানকে। একইদিনে মুখ্য সচিবকে নতুন সদস্য যুক্ত করলেও মাস না পার হতেই তাকে এ কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

এখন প্রশ্ন আসে আমলাতন্ত্র পরিচালনায় কমিটির এসব যোগ-বিয়োগ কী স্বাভাবিক বার্তা দেয়?কমিটি দিয়ে কী প্রশাসনের নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়নের প্রাত্যহিক কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়? জনপ্রশাসনে পৃথক উপদেষ্টা নিয়োগে সমস্যা কোথায়? 


ডেল্টা টাইমস্/আইইউ

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
  এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ  
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।

ফোন: ০২-২২৬৬৩৯০১৮, ০২-৪৭১২০৮৬০, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।
ফোন: ০২-২২৬৬৩৯০১৮, ০২-৪৭১২০৮৬০, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com