তাহাজ্জুদ আদায়কারীদের নিয়ে আল্লাহর প্রশংসা
ডেল্টা টাইমস্ ডেস্ক:
|
![]() তাহাজ্জুদ আদায়কারীদের নিয়ে আল্লাহর প্রশংসা কোরআনের আলোকে তাহাজ্জুদ আদায়কারীদের মর্যাদা আল্লাহ তাআলা কোরআনে তাহাজ্জুদ পালনকারীদের প্রশংসা করে বলেন- ‘তারা শয্যা ত্যাগ করে তাদের প্রতিপালককে ডাকে আশায় ও আশঙ্কায়। আর আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে তারা ব্যয় করে।’ (সুরা সাজদা: ১৬) ‘তারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, অনুগত, ব্যয়কারী ও রাতের শেষ প্রহরে ক্ষমাপ্রার্থী।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৭) নবীজি (স.) নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়তেন। আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘আর রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ পড়বেন। এটা আপনার অতিরিক্ত দায়িত্ব। অচিরেই আপনার রব আপনাকে প্রশংসিত স্থানে প্রতিষ্ঠিত করবেন।’ (সুরা বনি ইসরাঈল: ৭৯) হাদিসে তাহাজ্জুদের ফজিলত রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন- ‘রমজানের পর সর্বশ্রেষ্ঠ রোজা হলো আল্লাহর মাস মুহাররমের রোজা, আর ফরজ নামাজের পর সর্বশ্রেষ্ঠ নামাজ হলো রাতের নামাজ (তাহাজ্জুদ)।’ (সহিহ মুসলিম: ১১৬৩) ‘তোমাদের তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা উচিত। কেননা তা তোমাদের পূর্বেকার সজ্জন ব্যক্তিদের প্রতীক এবং তোমাদের প্রতিপালকের নৈকট্য লাভের বিশেষ মাধ্যম। নামাজ গুনাহসমূহ বিমোচনকারী এবং গুনাহের প্রতিবন্ধক।’ (তিরমিজি: ৩৫৪৯, সহিহ ইবনে খুজাইমা: ১০৭৫) তাহাজ্জুদ আদায়কারীদের বৈশিষ্ট্য মূলত তাহাজ্জুদ আদায়কারীরা আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে থাকেন। তাই তারা মহান আল্লাহর বিশেষ রহমতপ্রাপ্ত হন। নবী কারিম (স.) বলেছেন- ‘আল্লাহ তাআলা প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকাকালে পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে ঘোষণা করতে থাকেন; কে আছে এমন, যে আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দেব। কে আছে এমন, যে আমার নিকট চাইবে? আমি তাকে তা দেব। কে আছে এমন, যে আমার নিকট ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করব।’ (বুখারি: ১১৪৫) জান্নাত লাভের মাধ্যম জান্নাত লাভের অনন্য মাধ্যম এই তাহাজ্জুদ। আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন- ‘হে লোকসকল! তোমরা পরস্পর সালাম বিনিময় কর, অভুক্তকে খাবার আহার করাও এবং রাতের বেলা মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন নামাজ আদায় কর। তাহলে তোমরা নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।’ (ইবনে মাজাহ: ১৩৩৪) ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি ইমাম গাজ্জালি (রহ.) লিখেছেন- ‘রাসুল (স.)-এর পর সাহাবায়ে কেরাম, তাবেইন ও আউলিয়ারা তাহাজ্জুদকে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ করেছিলেন। হজরত ওমর (রা.) রাতের ইবাদতে এতটাই নিমগ্ন থাকতেন যে তাঁর পরিবার তাঁর নিঃশ্বাসের আওয়াজ শুনে বুঝতে পারতেন তিনি জেগে আছেন।’ (ইহইয়া উলুমুদ্দিন) এক ব্যক্তি ইবরাহিম ইবনু আদহাম (রহ)-কে বলল- ‘আমি তাহাজ্জুদে উঠতে পারি না, তাই আমার জন্য একটি চিকিৎসা বলুন’। উত্তরে তিনি বললেন- ‘দিনের বেলায় গুনাহ করোনা, তাহলে তিনি তোমাকে রাতের বেলা তাঁর সামনে দাঁড় করাবেন। কারণ, রাতে তাঁর সামনে দাঁড়ানো অনেক বড় সম্মানের বিষয়। গুনাহগার সেই সম্মানের অধিকারী হয় না। (হা কাযা কানাসসালিহুন: ৩) আধুনিক প্রযোজ্যতা আধুনিক ব্যস্ত জীবনে তাহাজ্জুদের অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য: প্রথমে সপ্তাহে ১-২ দিন তাহাজ্জুদের লক্ষ্য রাখুন রাতের খাবার হালকা করুন এবং তাড়াতাড়ি ঘুমান তাহাজ্জুদের জন্য আলাদা অজু ও নামাজের স্থান প্রস্তুত রাখুন অ্যালার্ম সেট করে রাখুন এবং নিয়ত শক্ত রাখুন তাহাজ্জুদ মুমিনের অন্তরের সাথে আল্লাহর গভীর সম্পর্ক স্থাপনের উপায়। যারা রাতের গভীরে নিদ্রা ত্যাগ করে নামাজে দাঁড়ায়, তারা আল্লাহর বিশেষ প্রিয় বান্দা হিসেবে কোরআনে প্রশংসিত এবং অসীম পুরস্কারের অধিকারী। তাই আমাদের উচিত ধীরে ধীরে তাহাজ্জুদের অভ্যাস গড়ে তোলা, যেন আমরা কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত সেই সৌভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারি। ডেল্টা টাইমস্/আইইউ |
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |