আওয়াবিন নামাজের মাহাত্ম্য
প্রকাশ: রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৯, ১১:৪৯ পিএম

আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের উত্তম পন্থা হলো আওয়াবিন নামাজ আদায়। এই নামাজ নবী করিম (সা.) নিয়মিত আদায় করতেন। আওয়াবিন নামাজ পড়লে আল্লাহ তায়ালা বান্দার গোনাহ ক্ষমা করেন। আওয়াবিন শব্দটি ফার্সি। এটি ‘আওয়াব’ শব্দ থেকে নির্গত। এর আভিধানিক অর্থ হলো খোদাভীরু। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় মাগরিবের ফরজ ও সুন্নত নামাজ আদায় করার পর যে নফল নামাজ পড়া হয় তাকে আওয়াবিন নামাজ বলে। মাগরিবের নামাজের পর আওয়াবিনের ওয়াক্ত শুরু হয় এবং এশার আগ পর্যন্ত তার সময় বাকি থাকে।
এই নামাজ ৬-২০ রাকাত পর্যন্ত পড়া যায়। কোনো কোনো আলেম ছয় রাকাত আওয়াবিন পড়ার ক্ষেত্রে এভাবে মতামত দিয়েছেন যে, মাগরিবের পর দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা ব্যতীত চার রাকাত নফল নামাজ অতিরিক্ত পড়লে আওয়াবিনের ছয় রাকাত আদায় হয়ে যাবে এবং হাদিসে বর্ণিত আওয়াবিনের সওয়াবও লাভ করবে। তবে কিছু কিছু আলেমের মতানুসারে আওয়াবিনের ছয় রাকাতকে মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা থেকে অতিরিক্ত বলা হয়েছে। (তিরমিজি : ৪৩৭; ইলমুল ফিকহ : ২/৪৮)

বারো বছর ইবাদতের সওয়াব : আওয়াবিন নামাজ সংখ্যায় কম কিন্তু এর সওয়াবের পরিমাণ বেশি। যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর ছয় রাকাত আওয়াবিনের নামাজ আদায় করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে বারো বছর ইবাদত করার সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন। এটা হলো অতি অল্প সময়ে দীর্ঘকালের সওয়াব অর্জন করে আল্লাহর নৈকট্য লাভের সহজ উপায়। তাই আমাদের জন্য উচিত প্রতিদিন মাগরিবের নামাজের পর কিছু সময় আওয়াবিনের জন্য ব্যয় করা। এ প্রসঙ্গে নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের পর ছয় রাকাত নামাজ পড়ে, যার মধ্যে কোনো মন্দ কথাবার্তা বলেনি, তাহলে তার জন্য এই ছয় রাকাত বার বছর ইবাদতের বরাবর করা হবে।’ (ইবনে মাজাহ : ১২২২)জান্নাতে গৃহনির্মাণ : আওয়াবিন নামাজ একটি ফজিলত ও মর্যাদাময় নামাজ। এই নামাজ সলফে সালেহিনরা গুরুত্বসহকারে আদায় করতেন। এই নামাজের বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা বান্দার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন। দুনিয়ার জীবনে এই সামান্য আমল করতে পারলে বান্দা বেহেশতের শোভনীয় ঘরের অধিকারী হবে। এ মর্মে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের পর ২০ রাকাত নফল নামাজ পড়ে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য জান্নাতে একটি গৃহ নির্মাণ করেন।’ (তিরমিজি : ৪৩৭; ইবনে মাজাহ : ১৪৩৫)

মাগফিরাত লাভ : আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বান্দার গোনাহ বিভিন্ন উপায়ে ক্ষমা করে থাকেন। সেসব উপায়গুলোর মধ্যে আওয়াবিন নামাজ অন্যতম। এ ছাড়াও মাগফিরাতের দরজা বান্দার জন্য আল্লাহ নিকট সবসময় উন্মুক্ত। তাই আমাদের উচিত প্রতিদিন আওয়াবিন নামাজ পড়ার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার নিকট মাগফিরাত কামনা করা। হাদিসে আছে, হজরত আম্মার বিন ইয়াছির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) দেখেছি তিনি মাগরিবের পর ছয় রাকাত নামাজ আদায় করতেন। তিনি বলতেন, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের পর ছয় রাকাত নামাজ আদায় করবে, তার গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়।’ (তাবারানি : ৩/৩২৬)লেখক : শিক্ষক, নাজিরহাট বড় মাদ্রাসা,
ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
  এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ  
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।

ফোন: ০২-২২৬৬৩৯০১৮, ০২-৪৭১২০৮৬০, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো. জাহাঙ্গীর আলম, নির্বাহী সম্পাদক: মো. আমিনুর রহমান
প্রকাশক কর্তৃক ৩৭/২ জামান টাওয়ার (লেভেল ১৪), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত
এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত।
ফোন: ০২-২২৬৬৩৯০১৮, ০২-৪৭১২০৮৬০, ০২-৪৭১২০৮৬২, ই-মেইল : deltatimes24@gmail.com, deltatimes24@yahoo.com